সংস্থাটি আগে জানিয়েছিল, করোনা আক্রান্ত এবং আক্রান্ত রোগীর সেবায় নিয়োজিতদের মাস্ক পরলেই হবে। তবে শুক্রবার (০৫ জুন) নতুন নির্দেশনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যেসব এলাকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং যেখানে শারীরিক দূরত্ব মানা কঠিন সেসব জায়গায় অবশ্যই মাস্ক পরে চলাচল করা উচিত।
গত ডিসেম্বরের চীনের উহান থেকে করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত হয়। এরপর থেকে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে মাস্কের কার্যকারিতার বিষয়টি অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে সবার কাছে।
মাস্ক নিয়ে নতুন নির্দেশনায় ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেদ্রোস আধানম গাব্রিয়েসাস বলেন, ‘নতুন প্রমাণের আলোকে যেসব জায়গায় এই ভাইরাস ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে এবং শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি যেখানে মানা কঠিন সেসব স্থানে ডব্লিউএইচও সরকারগুলোকে জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক পরার ব্যাপারে উৎসাহিত করার পরামর্শ দিচ্ছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ, যেসব জায়গায় শারীরিক দূরত্ব সম্ভব নয়, যেসব মানুষের বয়স ৬০ বা তার বেশি কিংবা যাদের অবস্থা শয্যাশায়ী তাদের মেডিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। ’
জাতিসংঘের আওতাভুক্ত স্বাস্থ্য সংস্থাটি আরও জানায়, কেবল ফেস মাস্ক ‘কোভিড-১৯ থেকে কাউকে রক্ষা করতে পারবে না। ’
সম্ভব হলে এই রোগে আক্রান্তদের জনসমাগমে না আসার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিয়েছে এমন ব্যক্তিদের যদি বাইরে আসতেই তাহলে অবশ্যই মেডিক্যাল মাস্ক পরার জন্য পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
এর আগে মাস্ক নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সুস্থ মানুষের মাস্ক পরার দরকার আছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।
তখনকার নির্দেশনা ছিল, একই কক্ষে যারা করোনায় আক্রান্ত রোগীর সেবা যত্নে নিয়োজিত কেবল তাদেরই মেডিক্যাল মাস্ক পরলে চলবে। করোনা সন্দেহ রোগী ও করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক ও অন্যান্য সুরক্ষা পোশাক পরতে বলা হয়। অহেতুক সবার মাস্ক পরার দরকার নেই বলেও উল্লেখ করা হয়।
তবে বাংলাদেশসহ আরও অনেক দেশ মাস্ক নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমন পরামর্শ কানে নেয়নি। বরং জনসমাগমে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে দেশগুলোর সরকার।
তবে এবার আগের নির্দেশনা থেকে সরে এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে তারা। স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাস্ক নিয়ে নতুন নতুন নির্দেশনাও বেধে দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
সাধারণ মানুষের পরার জন্য নন-মেডিক্যাল মাস্কের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন উপাদানে তৈরি এসব মাস্ক তিন স্তরের হওয়া উচিত। যাতে পানি শোষণ করতে পারে তার জন্ ভেতরের স্তরটিতে তুলা জাতীয় উপাদান থাকা দরকার।
এসব মাঝের স্তরটিতে সেলাইহীন পলিপ্রোপিলিন উপাদান থাকা দরকার। এই স্তর কাজ করবে ফিল্টার হিসেবে এবং বাইরের স্তরটি হওয়া উচিত পানি নিরোধক পলিস্টার জাতীয় উপাদানে।
ডব্লিউএইচও’র জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেছেন, কাপড়ের এসব মাস্ক করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কার্যকরী এবং নিজে পরে সুরক্ষিত রাখা যায় অন্যকেও। মাস্ক পরাটাকে ‘কল্যাণজনক’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ডব্লিউএইচও’র প্রধান আধানমও মাস্ক পরাকে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় কার্যকরী কৌশলের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২০
ইউবি