ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

করোনা প্রতিরোধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২০
করোনা প্রতিরোধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন সংগৃহীত ছবি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র সম্ভাব্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ একটি গবেষণা।

জরিপে অংশ নেওয়া স্পেনের ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে।

‘হার্ড ইমিউনিটি’ ধারণা—যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ যখন কোন একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তখন এর সংক্রমণ ঠেকানো যাবে বলে ধারণা করা হয়।

অর্থাৎ ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জিত হতে হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ৭০-৯০ শতাংশ মানুষের আক্রান্ত হতে হবে।

স্প্যানিশ  ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডির হার স্পেনের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে তিন শতাংশের নিচে, কিন্তু দেশটির যেসব এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হবার হারও সেখানে বেশি।

গবেষণা দলের একজন সদস্য বলছেন, যদিও স্পেনে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার অনেক বেশি, কিন্তু বিস্তারের ব্যাপকতা বেশ কম, মানে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরির জন্য পর্যাপ্ত নয়।

তিনি বলছেন, এ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং রোগ শনাক্ত করে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমেই সামনের দিনে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জরিপ বলে ধারণা করা হয়।

ল্যানসেট সাময়িকীর ওই গবেষণায় আরও বলা করা হয়, প্রায় একই ধরনের গবেষণা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রেও হয়েছে। এতে দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি, এমনকি যেখানে সংক্রমণের হার ব্যাপক সেসব এলাকাতেও নয়।

স্পেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি
স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে এ পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণহানি হয়েছে ২৮ হাজার ৩৮৫ জনের। তবে গত তিন সপ্তাহে দৈনিক মৃত্যুর হার এক সংখ্যায় নেমে এসেছে।

জুনের তৃতীয় সপ্তাহে দেশটির সরকার জরুরি অবস্থা তুলে নেয় এবং বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশের জন্য সীমান্তও খুলে দেয়। ব্রিটিশ পর্যটকদের জন্য কোয়ারেন্টিন ছাড়াই দেশটিতে ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়।

তিন মাসের বেশি সময় ধরে স্পেনে কঠোর লকডাউন ছিল। তবে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গালিসিয়া রাজ্যে নতুন করে মহামারি শুরু হওয়ায় কর্মকর্তারা সেখানকার ৭০ হাজার মানুষের ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেন। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, সেখানকার পানশালাগুলো থেকে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

স্পেনেরে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী পানশালা ও রেঁস্তোরাতে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ যেতে পারবেন না।

গালিসিয়াতে নতুন করে ২৫৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন, এর মধ্যে লুগো প্রদেশে রয়েছেন ১১৭ জন। কাতালোনিয়ায় নতুন করে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সেখানকার স্বায়ত্তশাসিত সরকার নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

কাতালান প্রেসিডেন্ট কুইম তোরা, বলেছেন বার্সেলোনার পশ্চিমের জেলা সেগ্রিয়া থেকে কেউ বের হতে পারবেন না, কিংবা সেখানে কেউ নতুন করে প্রবেশও করতে পারবেন না।

সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।