পাকিস্তানের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনার কারণে দেশটিতে সরকারি প্রকল্পে কর্মরত চীনারা (পিএসইউ) মানসিক সমস্যা ও চাপে রয়েছেন। এ ঘটনায় মিত্র দেশটির ওপর অসন্তুষ্ট চীন সরকার।
পাকিস্তানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন সরকার। বিভিন্ন প্রকল্পে অনেক চীনা পাকিস্তানে কাজ করছেন। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তারা চীনে ফিরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
ফাঁস হয়ে যাওয়া অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের কিছু নথির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে গার্ডিয়ান।
এসব তথ্যে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে চীনা কর্মী ও স্থানীয় পাকিস্তানি কর্মীদের মধ্যে ‘পৃথকীকরণ’ নীতি প্রয়োগ করছে চীনা পিএসইউগুলো।
চীনের বৃহত্তম তেল ও গ্যাস পাইপলাইন কনট্রাক্টর এবং অপারেটর, চীন ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অংশ ব্যুরো অব জিওফিজিক্যাল প্রসপেক্টিংয়ের (বিজিপি) পাকিস্তান ইউনিটের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ঝ্যাং ওয়ানজি চীনভিত্তিক সদরদপ্তরে ৭ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি বার্তা পাঠান। এতে তিনি পাকিস্তান সরকারের কোভিড-১৯ মোকাবিলার পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি জনগণ সাধারণ নিয়মগুলোও মেনে চলছে না এবং তাদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতারও অভাব রয়েছে। ’
ওয়ানজির বিস্তারিত রিপোর্ট দেখে দ্য সানডে গার্ডিয়ান জানায়, পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রকল্পে বিজিপির সাতটি ইউনিটের ৮৭ কর্মী কাজ করছেন। পাকিস্তানে চীনা নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখার জন্য বিজিপি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে, তা এ রিপোর্টে বলা হয়েছে। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে চীনা ও পাকিস্তানি কর্মীদের পৃথকভাবে আইসোলেশনে রাখা, অন্তত দু’মাসের খাবার মজুদ রাখা এবং ভীষণ মানসিক চাপে থাকা চীনা কর্মীদের জন্য কাউন্সেলিং সুবিধার ব্যবস্থা করা।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হিসেবে পাকিস্তানে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে চীন। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পর বিক্ষোভ, ধর্মঘট, সড়ক অবরোধ এবং দেশটিতে চীনা দূতাবাসের সামনে আন্দোলন করেছেন চীনা কর্মীরা। এতে প্রকল্পের কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
চীনের তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোচীনাও একই ধরনের একটি রিপোর্ট পাঠায় বেইজিংয়ে। এতে বলা হয়, ‘সরকারের দুর্বল নিয়ন্ত্রণের কারণে’ জুলাই মাসের শেষে পাকিস্তানে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়াতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২০
এফএম