মঙ্গলবার বিকেল, হঠাৎ ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকা। বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিলো যে, গোটা বৈরুত শহরই কেঁপে ওঠে।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে মানুষের চিৎকার ও ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। বাড়িঘরের জানালার কাচ ও ব্যালকনি ভেঙেও অনেকে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জন নিহত ও প্রায় চার হাজার আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কী করে এত বড় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটলো তার কারণ অনুসন্ধানের পর লেবাননের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান বলেছেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। পরিকল্পিতভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। বন্দর এলাকায় রাখা অত্যন্ত বিপজ্জনক বিস্ফোরক রাসায়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুদামে দুই হাজার সাতশ ৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে রাখা ছিলো। কোনো কারণে সেখানে আগুন লাগে আর তা বিস্ফোরিত হয়।
এর আগে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছিলো, আতশবাজির এক গুদাম থেকে এই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।
লেবাননের রাষ্ট্র-পরিচালিত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, বন্দর এলাকায় একটি বিস্ফোরকের ডিপোতে আগুন লাগার পর ওই বিস্ফোরণ ঘটে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যে স্থানটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে বন্দরের গুদাম রয়েছে। রাসায়নিকের মজুদ থাকা বন্দরের গুদামে প্রথম আগুন লাগার কথা জানা গেছে।
এদিকে ঘটনার পর পর টুইটারে বিস্ফোরণের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেটিতে বিস্ফোরকের কারণেই এ ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে বলে বোঝা গেছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, সেন্ট্রাল বৈরুতের আকাশে ধোঁয়ার লাল কুণ্ডুলী। এর পরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেন্ট্রাল বৈরুতের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষজন চিৎকার, ছুটোছুটি করেছে। বহু ঘরবাড়ি ও গাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের তোলা ভিডিও এবং ছবিতে শহরজুড়ে ভবনগুলোর দরজা ও জানালার গ্লাস ভেঙে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
বিবিসিকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিলো তীব্র ও কান ফাটানো।
অনিরাপদভাবে কোনো গুদামে দুই হাজার সাতশ ৫০ টন বিপজ্জনক বিস্ফোরক মজুত রাখার বিষয়টি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন।
ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে প্রাণ বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২০
এএটি