সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। একইসঙ্গে ১৯৯৩ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড দাউদ ইব্রাহিমকে প্রতিবেশী দেশটি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছে।
অস্ত্র ও মাদক বাণিজ্য এবং সন্ত্রাসবাদী বিভিন্ন গ্রুপকে পাকিস্তান অব্যাহতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে বলে শুক্রবার (৭ আগস্ট) জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের (ইউএনএসসি) উচ্চ পর্যাযের এক বিতর্কে এসব অভিযোগ উত্থাপন করে ভারত।
ভারত পরামর্শ দিয়ে বলেছে, ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) মতো সংস্থার সাথে জাতিসংঘের সমন্বয় বাড়ানো দরকার, যা অর্থপাচার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি নিবদ্ধ হলে তা কীভাবে ভালো ফল এনে দেয় তার উদাহরণ হিসেবে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপের সাফল্যের কথা তুলে ধরে ভারত।
দাউদ ইব্রাহিম ও তার ডি-কোম্পানি, লস্কর-ই-তৈয়বা ও জয়শ-ই-মোহাম্মদের মতো সন্ত্রাসী গ্রুপের হুমকি মোকাবিলায় একই রকম মনোনিবেশ মানবজাতির কল্যাণে কাজ করবে ভারতের বিবৃতিতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে বিবৃতিতে ভারত বলেছে, পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলগুলি থেকে সন্ত্রাসবাদকে উত্সাহিত করার জন্য রাষ্ট্রটিকে জবাবদিহি করা জরুরি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রস্তাবগুলি সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন রোধ ও দমন করার ক্ষেত্রে সদস্য দেশের প্রাথমিক দায়িত্বকে পরিষ্কার করে দেয় বলে বিবৃতিতে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ভারত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ আজ মানবজাতির সবচেয়ে মারাত্মক হুমকির মধ্যে একটি এবং এটি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে পার্থক্য করে না।
সন্ত্রাসবাদের জোরালোভাবে নিন্দা জানিয়ে ভারত বলেছে, সন্ত্রাসবাদের কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না এবং সন্ত্রাসবাদের মূল কারণ অনুসন্ধান করা খড়ের গর্তে একটি সূঁচ খোঁজার সমতুল্য।
১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, একটি সংগঠিত অপরাধ চক্র ‘ডি-কোম্পানি’ একের পর এক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
এই হামলার ফলে আড়াই শতাধিক নিরীহ লোকের প্রাণহানি ঘটে এবং কয়েক মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির ক্ষতি হয়। বলা বাহুল্য, এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিও প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে অব্যাহতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে, সেখান থেকেই অস্ত্র পাচার ও মাদক ব্যবসায় অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি সংঘবদ্ধ অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, জাতিসংঘ যাদের নিষিদ্ধ করেছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অ্যবাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিদষদের ওই বিতর্কে ভারত দাউদ ইব্রাহিম ও তার ডি-কোম্পানি, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জয়শ-ই-মোহাম্মদের মতো নিষিদ্ধ ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধিসহ সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি মোকাবিলায় পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে।
এতে বলা হয়, এই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আর্থিক ও অর্থনৈতিক সম্পদের প্রশাসনিক কাঠামোর সক্ষমতা জোরদার করতে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) সুপারিশ বাস্তবায়ন করা সর্বাধিক অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২০
এমজেএফ