যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের কেনোশা শহরে পুলিশের একাধিক গুলিতে আহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেকব ব্লেক পঙ্গু হয়ে গেছেন। তার পরিবার ‘অলৌকিক’ কিছু ঘটার আশায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী বেনজামিন ক্রাম্প।
বুধবার (২৬ আগস্ট) সিএনএন এ তথ্য জানায়।
সাংবাদিকদের বেনজামিন বলেন, ‘অলৌকিক কিছু ঘটলেই কেবল জেকব ব্লেক আবার হাঁটাচলা করতে পারবেন। ’
পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার দু’দিন পর মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ২৯ বছর বয়সী জেকবের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
রোববার (২৩ আগস্ট) কেনোশা শহরে জ্যাকব ব্লেক পুলিশের গুলিতে আহত হন। জেকব রাস্তার ধারে পার্ক করে রাখা তার গাড়ির ভেতর তিন সন্তানকে রেখে একটি প্রয়োজনে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে গাড়ির দরজা খুলে চালকের আসনে বসার সময় পুলিশ পেছন থেকে ব্লেককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গাড়িতে বসা জেকবের ৩, ৫ ও ৮ বছর বয়সী তিন ছেলের সামনে তাকে সাতবার গুলি করে পুলিশ।
তার আইনজীবীদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এর মধ্যে অন্তত একটি গুলি তার মেরুদণ্ডে লেগেছে। ফলে তিনি পঙ্গু হয়ে গেছেন এবং চিকিৎসকদের আশঙ্কা, তিনি আর হাঁটাচলা করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, গুলিতে তার পাকস্থলি, বাহু, কিডনি ও লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তার মলাশয় ও ক্ষুদ্রান্ত্রের অধিকাংশই অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলতে হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আবারও উত্তাল হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র।
জেকবকে গুলি করার ঘটনাকে ‘অনর্থক হত্যাচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন তার বাবা। তিনি বলেন, ‘তারা (পুলিশ) আমার ছেলেকে সাতবার গুলি করেছে...... সাতবার যেন সে গুরুত্বপূর্ণ কেউ নয় কিন্তু আমার ছেলে গুরুত্বপূর্ণ। সে একজন মানুষ এবং সে গুরুত্বপূর্ণ। ’
তিনি বলেন, ‘আমার নাতিরা বারবার জানতে চাইছে তাদের বাবাকে কেনো পুলিশ পেছন থেকে গুলি করলো। ’
পুলিশ জানায়, তারা গৃহবিবাদের একটি ঘটনায় ওই জায়গায় যায়। তবে জেকবকে গুলি করার পেছনের কারণ কী ছিল তা এখনো জানায়নি পুলিশ।
যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা জ্যাকবকে গুলি করেছে, তাকে যেন গ্রেফতার এবং বিচারের আওতায় আনা যায়, সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার আইনজীবীরা।
গত মে মাসে মিনিয়াপোলিসে পুলিশি সহিংসতার শিকার হয়ে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরপরই বর্ণ বৈষম্য এবং পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি পুলিশের বরাদ্দ বাতিল করার দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। ফলে কেনোশা, পোর্টল্যান্ড, ওরেগন, নিউইয়র্ক সিটি, ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যানহাটন, মিনিয়াপোলিসসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্য শহরগুলোতে নতুন করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২০
এফএম