শ্রীলঙ্কার আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন অ্যানগোদা লুক্কার সহযোগী আথুরুগিরিয়ে লাদিয়াকে খুঁজছে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কি-না ২০১৭ সাল থেকেই ছদ্মবেশ ধারণ করে ভারতে বসবাস করে আসছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, লুক্কার মৃত্যুর পর থেকে মাদক চোরাচালানে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী লাদিয়ার সন্ধানে কাজ করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর মতো সংস্থাগুলো।
২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কায় প্রিজন বাসে হামলার ঘটনার পর থেকে একেবারে উধাও হয়ে গিয়েছিল লুক্কা ও তার সহযোগী লাদিয়া।
ধারণা করা হয়, তারা সেসময় আন্তর্জাতিক মাদক কারবারীদের সহযোগিতায় জাহাজের মাধ্যমে মাকান্দুরে মধুশের কাছে পালিয়েছিল। মাকান্দুরে মধুশ ও তার ইমরান নামের এক সহযোগীসহ দুবাই থেকে মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করতো। পালানোর আগে ভিন্ন নামে শ্রীলঙ্কান পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছিল লুক্কা ও লাদিয়া।
গত বছর মধুশ এবং ইমরান দুবাইতে ধরা পড়ে এবং তাদের শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের কলম্বো জেলে রাখা হলে সেখান থেকেই তারা মাদকের কারবার চালিয়ে আসছিল। তাদের খোঁজ মিললেও লুক্কা এবং লাদিয়া ছিলেন লাপাত্তা। ৩ জুলাই তামিলনাড়ুর কইম্বাতোরে একটি মৃত্যুর ঘটনা লুক্কার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত ওই ব্যক্তি মূলত লুক্কা। এ নিয়ে তদন্তও চলছে।
২০১৮ সাল থেকে ওই ব্যক্তি কইম্বাতোরে বসবাস করে আসছিল প্রদীপ সিং নাম ধারণ করে। তার যে আধার কার্ডটি ছিল প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা। পোস্টমর্টেম শেষে মাদুরাইয়ে ওই ব্যক্তির সৎকার করা হয়।
এদিকে লুক্কার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে আমানি থানশি, জ্ঞানেশ্বরন ও শিবগামী সুন্দরী নামের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে আমানি ছিল লুক্কার বান্ধবী। পুলিশ ধারণা করছে, লুক্কাকে হত্যা করা হয়েছে।
গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, লুক্কা শ্রীলঙ্কার আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষস্থানীয়দের একজন। সে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মাদক চোরাচালানে জড়িত ছিল। সে গ্রুপগুলোকে সমুদ্রপথে মাদক সরবরাহ করতো পাকিস্তানভিত্তিক সিন্ডিকেট।
তিনি আরও বলেন, মধুশ, ইমরান এবং লুক্কার কারণে কালু সাগারা, ওয়েলে সুধা, কোসগোদা সুজি, কিরুলাপোন মেরিল এবং সিদ্দিকের মতো গ্যাংস্টাররা প্রভাব হারাতে শুরু করে। এমন পর্যায়ে লুক্কার মৃত্যুতে তাদের হাত থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
লুক্কার মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আসার পর থেকে ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এনকাউন্টারে তার তিন সহযোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ধারণা করা হয়, লুক্কা কোনোভাবে দুবাই থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং সন্দেহ দানা বাঁধছে এখানে ঘাঁটি গড়ার জন্য নির্দেশিত ছিল সে। লাদিয়া হয়তো তাকে অনুসরণ করেছে তাই তাকে খোঁজার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শ্রীলঙ্কান ফোর্সও লাদিয়ার অবস্থান জানার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২০
এইচএডি