অভিযোগ উঠেছে, গত নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর থেকে তুরস্কে একনায়কতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ প্রশ্নে তার পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলও নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এরমধ্যে এরদোয়ান সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপ, বিরোধী এবং ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসা সংস্থার সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন শুরু। সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, স্বৈরাচারী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও বিরোধীদের নিরস্ত্র করতে গুলেন আন্দোলনের সমর্থকদের নির্মূল করা শুরু করেছেন এরদোয়ান।
তুর্কি সরকার ফেতুল্লাহ গুলেনের সমর্থকদের এবং তার নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকে দেশের সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এক ধরনের বিতাড়িত করা হচ্ছে। এরমধ্যে তুর্কি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এরদোয়ান আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর গুলেনপন্থী সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর সর্বাত্মক অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
গুলেনপন্থী মনোভাব প্রকাশের অভিযোগে মোট ৬৬ জন সৈন্যকে একসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল এরদোয়ানের নির্দেশনার পরই। এরমধ্যে ১৮ জন হলেন সাবেক সৈন্য। যাদের ফেতুল্লাহ গুলেনের ধারণাগুলো সমর্থন করার জন্য এবং ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ‘অভ্যুত্থান’ চেষ্টায় অংশ নেওয়ার কারণে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এদিকে, পুলিশ ফেতুল্লাহ সন্ত্রাসবাদী সংস্থার (এফইটিও) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে আরও ৭৯ জনকে। এটি ফেতুল্লাহ গুলেনের ধারণার প্রতি বিশ্বাসী একটি সংগঠন বলেও জানা গেছে।
গ্রেফতারের পাশাপাশি সরকারের তৎপরতায় তুর্কি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ফেতুল্লাহ সন্ত্রাসবাদী সংস্থার অন্যান্য সদস্যদেরও সন্ধান করছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
এছাড়া রাজধানী আঙ্কারায় এফইটিও’র সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এবং এনক্রিপ্ট করা মেসেজিংয়ে মোবাইল অ্যাপ ‘বাইলক’ ব্যবহার করার জন্য ১২ জন শিক্ষককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ফিউচার পার্টির নেতা আহমেত দাভোতোগলু এরদোয়ানের কড়া সমালোচনা করেছেন এসব কর্মকাণ্ডের জন্য। ইস্তাম্বুলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরাসরি এ ধরনের পদক্ষেপ প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন এ রাজনীতিবিদ। একইভাবে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা সেজগিন তানরিকুলুও তুরস্কের সংসদে এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
টিএ