ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছেন বাংলাদেশিরা 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছেন বাংলাদেশিরা  ছেলে শাহরিয়ার আসফাকের সঙ্গে ডা. খালেদা নাসরিন

রুশ বাহিনীর আক্রমণের পর ইউক্রেনজুড়ে এখন যুদ্ধ চলছে। এমন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর থেকে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন।

একইভাবে সেখানে থাকা বাংলাদেশিরা ইউক্রেন ছাড়ার চেষ্টা করছেন।  

তাদের একজন চিকিৎসক খালেদা নাসরিন। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ। এই শহরটি রুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল দূরে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তিনি গভীর রাতে দুই ছেলেকে নিয়ে ওই শহর থেকে রওয়ানা হয়েছেন এক হাজার মাইল দূরে পশ্চিম ইউক্রেনের শহর লাভবে।

লাভবে তিনি যাচ্ছেন কারণ শহরটি পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে। বেশি বিপদ দেখলে পোল্যান্ডে ঢুকে যেতে পারবেন তিনি। তার ব্যবসায়ী স্বামী আপাতত খারকিভেই রয়ে গেছেন।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৬ সাল থেকে পরিবার নিয়ে খারকিভে বসবাস করছেন খালেদা নাসরিন। ছুটি পাননি বলে চাকরি ছেড়ে যেতে হচ্ছে। দুপুরের দিকে তার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তার ট্রেন সবেমাত্র রাজধানী কিয়েভের রেল স্টেশনে ঢুকছে।

খালেদা নাসরিন বলেন, তিনি খুবই মানসিক চাপে রয়েছেন। কারণ সকালে টেলিফোনে তার স্বামী জানিয়েছেন, খারকিভে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে এবং শহরে প্রচণ্ড আতঙ্ক। ঘরবাড়ি ছেড়ে আসার কারণে এবং কবে ফিরতে পারবেন, কী পারবেন না—তা নিয়ে তার দুই ছেলেও মানসিকভাবে মুষড়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘বন্ধু ও স্কুল চেড়ে যেতে হচ্ছে বলে আমার ১২ বছরের ছোটো ছেলের মন খুবই খারাপ’।  

বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেনে ওঠার সময় পর্যন্ত জানতেন না যুদ্ধ আদৌ লাগবে কি না। লেগে যাওয়ার পর এখন স্বামীকে নিয়ে বাড়তি উৎকণ্ঠায় পড়ে গেছেন খালেদা নাসরিন।

এই চিকিৎসকের মতো অনেক বাংলাদেশি এখন ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছেন। এরই মধ্যে ইউক্রেন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে পোল্যান্ড পৌঁছেছেন সাতজন প্রবাসী বাংলাদেশি। পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ওই সূত্রটি জানায়, শুক্রবার সকাল থেকেই ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে রওয়ানা দেন। ইতোমধ্যে সাতজন বাংলাদেশি নাগরিক সীমান্ত অতিক্রম করে পোল্যান্ড পৌঁছেছেন। তাদের পোল্যান্ড দূতাবাসের কর্মকর্তারা গ্রহণ করেছেন।

সীমান্ত অতিক্রম করা বাংলাদেশি নাগরিকরা সাময়িকভাবে পোল্যান্ডে থাকবেন। পরে তাদের দেশে ফেরত আনা হবে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। পোল্যান্ডের ওয়ারসতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ইউক্রেনে বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেনে হাজার দেড়েক বাংলাদেশি রয়েছে, যাদের মধ্যে শ পাঁচেকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের ট্রানজিট ভিসায় পোল্যান্ডে এনে দেশে পাঠানোর চেষ্টা শুরু করেছেন তারা।

জানা গেছে পোল্যান্ড সরকার ইউক্রেনে বসবাসরত বিদেশী নাগরিকদের ১৫ দিনের জন্য ট্রানজিট ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে তারা দেশে আসতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।