ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এরইমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর তারা দখল করে নিয়েছে।
যুদ্ধের মাঠে দুই পক্ষেরই হতাহতের খবর আসছে। এরইমধ্যে মানবাধিকার সংগঠন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধে রাশিয়া ভ্যাকুয়াম বা থারমোব্যারিক বোমা ব্যবহার করেছে।
সোমবার সুমি অঞ্চলে বিস্ফোরণে যে তেল পরিশোধনাগার বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখানে এই ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। নিরপেক্ষ কোন সূত্র থেকে বিষয়টি যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এই ভ্যাকুয়াম বোমা আসলে কতটা ভয়ঙ্কর তা জানতে হলে এটা কী দিয়ে তৈরি, কীভাবে কাজ করে আর প্রভাব কী তা জানা দরকার।
বলা হয়, বিস্ফোরক দিয়ে তৈরি বোমার চেয়েও মারাত্মক বিধ্বংসী এই ভ্যাকুয়াম বোমা।
এই বোমা অ্যারোসল বোমা হিসেবেও পরিচিত। এটা তৈরি করা হয় জ্বালানি তেলের কন্টেইনার এবং বিস্ফোরক চার্জার দিয়ে। এটা বিস্ফোরণের পর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে জ্বালানি তেল। এরপর আবার ঘটে বিস্ফোরণ। আগুনের গোলায় পরিণত হয়ে বড় ধরনের শক ওয়েভ বা শব্দ তরঙ্গের ধাক্কা তৈরি করে। ফলে এর আশপাশের বাতাসের সব অক্সিজেন পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
রয়াল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের গবেষক জাস্টিন ব্রঙ্ক বিবিসিকে বলেছেন, ভ্যাকুয়াম বোমায় শুধু জ্বালানি তেল থাকে যা বাতাস থেকে সব অক্সিজেন শুষে নেয়। অনেক বোমার চেয়েও এটি বেশি শক্তিশালী।
এই বোমা রকেট আকারে নিক্ষেপ করা যায় অথবা বিমান থেকে ফেলা যায়।
এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটলে যে তাপ ও চাপ সৃষ্টি হয় তা ভয়ঙ্কর। এর মাঝখানে যা পড়বে তা নিমিষেই বাষ্পের মতো উবে যাবে।
এই বোমা বিস্ফোরণের আশপাশে মানুষ থাকলে তাদের শরীরের ভেতরের ফুসফুসসহ অঙ্গগুলো চুরমার হয়ে যাবে। বদ্ধ জায়গায় এই বোমার শক্তি আরও বেশি।
রাশিয়া ইউক্রেনে এ বোমা ব্যবহার করছে কি না তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিবিসি জানাচ্ছে, ১৯৬০-এর দশক থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা বাহিনী ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করেছে। আফগানিস্তানে গুহার মধ্যে অবস্থান নেওয়া আল-কায়েদা যোদ্ধাদের আক্রমণে মার্কিন বাহিনী এই বোমা ব্যবহার করেছে। এছাড়া ২০০০ সালে রাশিয়া চেচনিয়াতে এই বোমা ব্যাবহার করে বলে অভিযোগ আছে। সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২২
নিউজ ডেস্ক