ভারতে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে এবার কঠোর বার্তা দিল আমেরিকা।
তারা ভারতের বিরুদ্ধে এর আগে কখনও এভাবে সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেনি।
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে নজিরবিহীনভাবে নয়াদিল্লিকে এই কঠোর বার্তা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি কূটনৈতিক ভাষায় বলেন, ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে, আর সে দিকে আমরা নজর রাখছি।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ভারতের সরকার, পুলিশ এবং কারাগারের কর্মকর্তাদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে।
কয়েকদিন আগে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য ইলহান ওমারও ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, মোদি সরকার মুসলিমদের ওপর আর কী করলে আমরা তাদের পার্টনার ভাবা বন্ধ করব?
এর এক সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা এলো।
মোদির সমালোচকরা বলছেন, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দু জাতীয়তাবাদী শাসক দল ধর্মীয় মেরুকরণকে উৎসাহিত করেছে।
মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে ধর্মীয় রূপান্তর ঠেকানোর নামে ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলো সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ শুরু করে। বেশ কয়েকটি রাজ্য ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনও পাস করেছে বা বিবেচনা করছে যা সাংবিধানিকভাবে বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে।
২০১৯ সালে মোদী সরকার একটি নাগরিকত্ব আইন পাস করে। এ আইনের সমালোচকরা বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা মুসলিম অভিবাসীদের বাদ দিয়ে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান দুর্বল করা হয়েছে। ২০১৫ সালের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু, জৈন, পার্সি এবং শিখদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য এই আইনটি তৈরি করা হয়েছিল।
একই বছর ২০১৯ সালের নির্বাচনে ফের জয়লাভের পরপরই মোদীর সরকার দেশের বাকি অংশের সাথে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলকে সম্পূর্ণরূপে সংহত করার জন্য কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। বিক্ষোভ দমন করতে সেখানকার অনেক রাজনৈতিক নেতাকে আটক করে এবং অনেক আধা-সামরিক পুলিশ ও সৈন্য মোতায়েন করা হয়।
মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সম্প্রতি কর্ণাটক রাজ্যে ক্লাসরুমে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছে। কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো পরে ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও এমন বিধিনিষেধের দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
নিউজ ডেস্ক