ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারত সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এজেন্ডা কী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
ভারত সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এজেন্ডা কী?

ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে ভারত সফর করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার এ সফরের এজেন্ডা নিয়ে চলছে আলোচনা।

ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের অবস্থান পশ্চিমাদের পক্ষে নেওয়ার জন্যই তার এ সফর।  

পশ্চিমারা চায় ভারত যেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী অবস্থান নেয়। মনে করা হচ্ছে, সেই এজেন্ডা পাকাপোক্ত করতেই জনসনের এ সফর।  
 
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আশা করছেন, তিনি ভারতকে পাশ্চাত্যের দিকে আকৃষ্ট করবেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতির কারণে রাশিয়ার তেল ও অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা থেকে দেশকে মুক্ত করবেন।

জনসন বৃহস্পতিবার ভারতে পৌঁছেন। তার দুই দিনের সফর শুরু করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাট দিয়ে।  

সফরের আগে জনসন সাংবাদিকদের বলেন, স্বৈরাচারী রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে আমরা যেহেতু হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি, তাই গণতন্ত্র এবং বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর একসঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।  

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এটি শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু পশ্চিমারা চায় ভারত যেন রাশিয়ার নিন্দা করে।  

ভারতের শীর্ষ তেল কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন গত মার্চে রাশিয়ার কাছ থেকে ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কেনে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে রাশিয়ার তেল কেনা না বাড়ানোর জন্য মোদীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  

কিন্তু মোদী এ বিষয়ে বেইডেনকে কোনও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেননি। উল্টো ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাশিয়ার তেলের ওপর ইউরোপের নির্ভরতার কথা তুলে ধরেছেন।

জয়শঙ্কর গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউরোপ এক বিকেলের জন্য যা তেল কেনে, আমাদের এক মাসের খরচ তার চেয়ে কম।  

অন্যদিকে রাশিয়া এখনও ভারতের প্রধান প্রতিরক্ষা অংশীদার। ক্রেমলিন ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে নয়াদিল্লিতে ৬.৬ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানি করেছে।

জনসনের মুখপাত্র বলেছেন, প্রতিরক্ষা ক্রয় এবং শক্তির জন্য বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করবেন জনসন।

নয়াদিল্লিতে অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের (ওআরএফ) ফেলো বিবেক মিশ্র বলেছেন, ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে জনসনের আলোচনায় ইউক্রেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকবে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি না, যুক্তরাজ্য কোনো একটি দেশকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে ভারতকে পশ্চিমাদের সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি করানোর জন্য খুব বেশি চেষ্টা করবে। আমি মনে করি, বিচ্ছিন্নতার বিষয়ে ভারতের অবস্থান বেশ স্পষ্ট।  

ওয়াশিংটন ডিসির উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যানও একই মত পোষণ করেন।

তিনি বলেন, রাশিয়া নিয়ে ভারতকে তার অবস্থান পরিবর্তন করাতে কেউ সফল হয়নি এবং জনসনও তা করবেন না। নয়াদিল্লির অবস্থান বেশ অপরিবর্তনীয়।  

তিনি বলেন, আমরা যা আশা করতে পারি তা হলো, অন্যান্য সমমনা পশ্চিমা নেতাদের মতো জনসনও ভারতকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সহজ করার আহ্বান জানাবেন।  

মাল্টা, জর্ডান ও লিবিয়ায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অনিল ত্রিগুণায়ত আল জাজিরাকে বলেন, ভারতের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও পাকিস্তান সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের অবস্থান বোঝার জন্য ভারতও এই বৈঠকটি ব্যবহার করতে পারে। সূত্র: আলজাজিরা

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।