ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

চীনা সামরিক বাহিনী আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
চীনা সামরিক বাহিনী আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে

চীনা সামরিক বাহিনী গত পাঁচ বছরে আরও বেশি আগ্রাসী ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি।

রোববার (২৪ জুলাই) ইন্দো-প্যাসিফিক সফরকালীন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।

খবর গার্ডিয়ানের

মিলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো গত পাঁচ বছরে অসংখ্যবার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা বিমান ও জাহাজ কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। একই অনুপাতে অনিরাপদ মিথস্ক্রিয়া সংখ্যাও বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বার্তাটি হলো- চীনা সামরিক বাহিনী এ অঞ্চলটির আকাশ ও সমুদ্র সীমানায় উল্লেখযোগ্যভাবে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে যা লক্ষণীয়।

চীনের সেনাবাহিনী, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোর সেনাবাহিনীর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের ঘটনার সম্পূর্ণ সংকলন প্রতিবেদন আকারে প্রকাশের নির্দেশও দেন জেনারেল মিলি।

চলতি সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিরক্ষা প্রধানদের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা আছে মার্কিন এ জেনারেলের। বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়গুলো চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক বৃদ্ধি ও একটি মুক্ত-শান্তিপূর্ণ প্রশান্ত মহাসাগর বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা তাইওয়ানের চীনা আক্রমণের শঙ্কা করছেন। তাদের ধারণা ২০২৭ সালে এ আক্রমণ হতে পারে। কারণ হিসেবে তারা বলছে, চীন শাসিত দ্বীপটিতে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক উস্কানি বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা গত এপ্রিলে বেইজিং ও সলোমন দ্বীপপুঞ্জের মধ্যকার স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা চুক্তি সম্পর্কেও উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন, এ চুক্তি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে চীনা নৌ ঘাঁটি স্থাপনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও অঞ্চলটিতে চীনা সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়টি বরদাস্ত করা হবে না বলে সলোমন দ্বীপপুঞ্জকে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।

এ ব্যাপারে জেনারেল মিলি বলেন, এটি এমন একটি এলাকা যেখানে চীন তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে। এটি উদ্বেগজনক কারণ চীন সব রকম পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য এটি করছে না। তারা পুরো অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এর সম্ভাব্য পরিণতি এ অঞ্চলে আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের জন্য অনুকূল নয়।

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, চীনের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা ও ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা করার প্রচারণার অংশ হিসাবে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোর সঙ্গে নিজেদের সামরিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদারের পদক্ষেপ নিচ্ছে জো বাইডেনের প্রশাসন। ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আন্দিকা পেরকাসার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথাও বলেন মার্কিন জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি।

তিনি বলেন, সামরিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদারে নেওয়া পদক্ষেপের আওতায় ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো এ অঞ্চলে মার্কিন সেনাবাহিনীকে পাশে চায়। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। চীনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তঃকার্যকারিতা বিকাশ ও সম্মিলিতভাবে নিজেদের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে চাই।

উল্লেখ্য, দুদিন আগে চীন ও রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্রের অপর ঘনিষ্ঠ দেশ জাপান। এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নবুয়ো কিশি বলেন, আন্তর্জাতিক কৌশলগত প্রতিযোগিতার কেন্দ্রে রয়েছে ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল।

এদিকে সাম্প্রতিক বার্ষিক প্রতিরক্ষা প্রতিবেদনে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নেতিবাচক প্রভাব এশিয়াতেও ছড়াতে পারে বলে উল্লেখ করে জাপান সরকার। চীন ও তাইওয়ানের মধ্যেও ইউক্রেনের যুদ্ধের নজির দেখা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করা হয় এতে। দুদিন না যেতেই জেনারেল মিলি চীন সম্পর্কে নিজের মূল্যায়ন জানালেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীনও পাল্টা জবাব দিতে পিছিয়ে থাকবে না।

বাংলাদেশ সময় : ১৭২৮ ঘণ্টা, ২৫ জুন, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।