ইউক্রেনে দখলকৃত চার অঞ্চলে অঞ্চলে সামরিক আইন জারি করেছে রাশিয়া, যা বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত একটি আদেশে সই করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সামরিক আইন জারি করা অঞ্চলগুলো হলো জাপোরিঝঝিয়া, খেরসন, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এসব অঞ্চল নিজেদের বলে ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এর জবাবে এসব এলাকায় পাল্টাহামলা জোরদার করেছে ইউক্রেন। এই পরিস্থিতিতে বুধবার এমন পদক্ষেপ নিলেন পুতিন।
আদেশে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত চার অঞ্চলে মার্শাল ল’ জারির আদেশে আমি সই করেছি। এটি অবিলম্বে ফেডারেশন কাউন্সিলে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে এবং ডুমাকে (রুশ পার্লামেন্ট) এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হবে। ’ খবর আল-জাজিরা
সামরিক আইন জারির ফলে এসব এলাকার জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলো। এই আইন কার্যকরের ফলে জাপোরিঝঝিয়া, খেরসন, লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের জনসাধারণ চাইলেও আর অন্য এলাকায় যেতে পারবেন না।
এদিকে রুশ ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে পুতিন ওই চার অঞ্চলে সামরিক আইন জারি সম্পর্কে বলেন, এই অঞ্চলে আমাদের মানুষদের সুরক্ষা, রাশিয়ার নিরাপত্তা ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের বেশকিছু কঠিন কাজ করতে হচ্ছে। যেসব রুশ নাগরিক যুদ্ধ করছেন, যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাদের প্রতি আমাদের যে সমর্থন সেটা অনুভব করা উচিত। তারা জানেন, আমাদের বিশাল এ দেশ, মহান এ দেশ এবং একতাবদ্ধ মানুষ তাদের পেছনে আছে। ’
তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলগুলোর সরকারপ্রধানদের জরুরি কিছু ক্ষমতা দেওয়া হবে। তবে কী কী ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, সেটি বলেননি তিনি।
খেরসন ছাড়ছে রুশ সমর্থিত প্রশাসন
অপরদিকে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের খেরসন শহর নিয়ন্ত্রণকারী রুশ-সমর্থিত প্রশাসন এখন সেখান থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। তবে তারা সেখানকার রুশপন্থী বেসামরিক লোকজনকেও সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। খেরসন পুনর্দখলের লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ওই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এরপরই রুশ পক্ষের প্রশাসনকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
খেরসনের রুশ-পন্থী প্রশাসক ভ্লাদিমির সাল্ডো বলেছেন, দনিপার নদীর পশ্চিম তীরের এই শহরের ৫০ থেকে ৬০ হাজার নাগরিককে ‘সুশৃঙ্খলভাবে ও ধাপে ধাপে’ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, তারা হঠে গেলেও রুশ সৈন্যরা পেছনে থেকে যাবে এবং একে রক্ষার জন্য আমৃত্যু লড়াই করবে।
আর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক উল্লেখ করেছেন, খেরসনকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার অনুষ্ঠানের এক মাসেরও কম সময় পার হয়েছে: ‘অলীক কল্পনার জগতে বাস করলে বাস্তবতা বড়োই কঠিন হয়। ’
রুশ টিভির খবরে দেখা যায়, লোকজন দনিপার নদীরে কূলে জড়ো হচ্ছেন এবং নৌকায় ওঠার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাদের সংখ্যা কত হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করে তখন প্রথম যে শহরের পতন হয়েছিল সেটি হচ্ছে খেরসন। এখন একে ইউক্রেনের বাহিনীর জন্য কৌশলগত লক্ষ্যের একটি প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এমএমজেড