ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইন্দোনেশিয়াকে সামরিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অস্ট্রেলিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
ইন্দোনেশিয়াকে সামরিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অস্ট্রেলিয়া

পশ্চিম পাপুয়ায় সহিংসতা বৃদ্ধি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মধ্যেও ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, যৌথ মহড়া পরিচালনা এবং অস্ত্র রপ্তানি অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া।

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বের একটি প্রদেশ পশ্চিম পাপুয়া।

অঞ্চলটি গড়ে উঠেছে নিউ গিনি দ্বীপকে কেন্দ্র করে। যেখানে কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলে আসছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগ আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, গত মে মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত অ্যান্টনি আলবানিজ ও তার সরকার ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ ও সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রাখবে। ইন্দোনেশিয়া তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

কিছু প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সামরিক সম্পর্ক রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যৌথ প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০১৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার অভিজাত বাহিনী কোপাসাসের কাছে তিনটি বুশমাস্টার ট্রুপ ক্যারিয়ার বিক্রি করে অস্ট্রেলিয়া।

কোপাসাসের মতো সামরিক ইউনিটগুলো অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ বাহিনী স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্টের (এসএএসআর) সঙ্গে যৌথ প্রশিক্ষণ অনুশীলন করে আসছে। এসব প্রশিক্ষণ ডিটাচমেন্ট ৮৮ বা ডেনসাস ৮৮ নামে পরিচিত। ২০০২ সালে বালি বোমা হামলার পর এ সন্ত্রাস মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়ার এ বাহিনী গঠিত হয়। যাদের অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।

পশ্চিম পাপুয়ার আদিবাসীরা গত ৫০ বছর ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। এ সুযোগে অঞ্চলটিতে কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যে কারণেই মূলত অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যাপারে চুক্তি করে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। তা ছাড়া পশ্চিম পাপুয়ায় যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, সেটি তদন্ত করছে ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনী। তাদের কাছে পশ্চিম পাপুয়ায় যেকোনো হুমকি হ্রাসের কর্তৃত্বও রয়েছে।

পশ্চিম পাপুয়ায় যেসব সংগঠন স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে তাদের মধ্যে ফ্রি পাপুয়া মুভমেন্ট, বা অর্গানিসাসী পাপুয়া মেরডেকা (ওপিএম) উল্লেখযোগ্য। এসব সংগঠন প্রায় সময়ই ইন্দোনেশিয়ার বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে। ফলে অঞ্চলটিতে দেশটির সামরিক ও বিশেষ বাহিনীর ইউনিট সচরাচর দেখা যায়।

উল্লেখ্য, পশ্চিম পাপুয়ায় তিনটি নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল সৃষ্টির একটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল। গত জুনে এ ব্যাপারে ঘোষণা আসার পর অঞ্চলটিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। এ সময় ৪৪ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে ইন্দোনেশিয়ান পুলিশ। এ ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করে, ইন্দোনেশিয়ান পুলিশ ওই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ’ করেছিল।

অ্যামনেস্টির ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সরকার দাবি করছে তারা পাপুয়ায় ‘উন্নয়ন’ ও সেখানকার জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধি বজায় রাখতে চায়। কিন্তু পাপুয়ানরা কীভাবে সমৃদ্ধ হবে, যেখানে তাদের মতামত ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশের চেষ্টা সহিংসতার মধ্যেই থেকে যায়।

সূত্র: আল জাজিরা

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।