ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

পৌরপিতা নয়, সেবক হতে চান পিরোজপুরের হাবিবুর

শফিকুল ইসলাম জয়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
পৌরপিতা নয়, সেবক হতে চান পিরোজপুরের হাবিবুর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক/ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পিরোজপুর: বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর মধ্যে পিরোজপুর পৌরসভা অন্যতম। আর আমি এ পৌরসভায় টানা তিনবার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছি।

মানুষ আমাকে সবসময় কাছে পেয়েছেন, তাই এবারও আমার হাতেই তারা এ পৌরবাসীর দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন।

আমি নিজেকে পৌরপিতা নয়, জনগণের একজন সেবক মনে করি। আমার কাছে অর্থ বিত্তের চেয়ে মানুষের ভালবাসা বেশি দামি। আর সেই ভালবাসার তাগিদে মানুষ আমাকে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন।

সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে এক সাক্ষা‍ৎকারে এমন কথাই বললেন পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক।

গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত পিরোজপুর পৌরসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৃতীয়বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।

এর আগে ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চারদলের সমর্থিত প্রার্থী শহিদুল আলম নিরুকে হারিয়ে প্রথমবারের মত পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন হাবিবুর রহমান মালেক।

বাংলানিউজ পাঠকদের সুবিধার জন্য তার সঙ্গে কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য অংশ হুবহু তুলে ধরা হলো।

বাংলানিউজ: মেয়র হিসেবে আগামী পাঁচ বছর পৌরবাসীর জন্য কি ধরনের উন্নয়ন করতে চান ?

হাবিবুর রহমান মালেক: গত ১২ বছর ধরে পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ সময় পৌরসভার সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেনেজের ব্যবস্থা করেছি। নতুন পৌরভবনসহ গণশৌচাগার নির্মাণ করেছি।

এছাড়া শহরের রিজার্ভ পুকুরের চারপাশ সংরক্ষণসহ সেখানে সৌন্দর্য বর্ধন করেছি। পৌর কবরস্থানে নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন নাব্যতা হারানো খালগুলো খনন ও অবশিষ্ট রাস্তাগুলো পাকা করণসহ অবকাঠামোমূলক অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো। পিরোজপুর শহরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ বাসযোগ্য শহর গড়ে তোলার ইচ্ছা রয়েছে।

বাংলানিউজ: পিরোজপুর পৌর এলাকা মাদকমুক্ত করতে আপনি কি ভূমিকা রেখেছেন ?

হাবিবুর রহমান মালেক : পিরোজপুর পৌরসভা মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে সব ওয়ার্ডে আমি সভা করেছি। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়তে আমি সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেছি।

বাংলানিউজ : আপনার কাছ থেকে পৌরবাসী কি ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাবে ?

হাবিবুর রহমান মালেক : সাধারণ মানুষ অনেক আশা নিয়ে আমাকে প্রথমবার পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিল। আমি তাদের পাশে থেকে সেবা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি এলাকায় থাকায় মানুষ সুখে দুঃখে সবসময় আমাকে কাছে পান। পৌর নাগরিকরা যে কোন সমস্যা নিয়ে আমার কাছে এলে আমি তাৎক্ষণিক তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।

হাবিবুর রহমান মালেক ১৯৫৬ সালের ২৫ এপ্রিল পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একরাম আলী খলিফা শংকরপাশা ইউনিয়ন পরিষদে ৪০ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। হাবিবুর রহমান মালেকের বড় ভাই একেএমএ আউয়াল পিরোজপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য। আরেক ভাই মজিবুর রহমান খালেক পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ছোট ভাই মশিউর রহমান মহারাজ পিরোজপুর চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি।

হাবিবুর রহমান ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে মহকুমা কমিটির যুব সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

২০০৪ সালে প্রথম পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে ও ২০১৫ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিন হন। তিনি একজন ভাল ফুটবল ও হকি খেলোয়াড়।

এছাড়া তিনি ভাল ব্যাডমিন্টনও খেলতেন। ইন্টার স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত ফুটবল খেলায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। ব্যক্তি জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক হাবিবুর রহমান মালেক। মেয়ে ডা. নওরীন রহমান ও ছেলে ফয়সাল রহমান এল এল বি (অনার্স) পাশ করেছেন।

জনদরদী নগর পিতা হাবিবুর রহমান মালেক জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের সেবায় কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, মানুষের প্রতি আমার ভালবাসার প্রতিদান হিসেবে পৌরবাসী আমাকেও ভালবাসেন। আমি তাদের ভালবাসার বিনিময়ে সারাজীবন পাশে থাকতে চাই।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
আরএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।