ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

-কুলি করার সময় অনিচ্ছায় গলার ভেতর পানি প্রবেশ করলে।
-প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্যকিছু শরীরে প্রবেশ করালে।

-রোজাদারকে জোর করে কেউ কিছু খাওয়ালে।
-রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবেহ সাদেকের পর পানাহার করলে।
-ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে।
-মুখ ভরে বমি করলে।
-জোরপূর্বক সহবাস করলে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর শুধু কাজা করতে হবে এবং স্বামীর কাজা-কাফফারা দু’টোই করতে হবে। -ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে, রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরও কিছু খেলে।
-বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেললে।
-কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে।
-জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে।
-অল্প বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা গিলে ফেললে।

এসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়। তবে এরপর কোনো খানাপিনা করা যাবে না। সারা দিন রোজার মতোই থাকতে হবে। এরূপ রোজার কাজা করা ওয়াজিব।

যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়
-বিনা ওজরে কোনো জিনিস মুখে দিয়ে চিবানো।
-গরমের কারণে বারবার কুলি করা।
-টুথ পাউডার, পেস্ট, কয়লা বা অন্য কোনো মাজন দ্বারা রোজার দিনে দাঁত পরিষ্কার করা।
-বিনা ওজরে জিহ্বা দ্বারা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা। তবে বদমেজাজি স্বামীর জন্য স্ত্রীর তরকারির স্বাদ গ্রহণ করার অনুমতি আছে।
-রোজাদার অবস্থায় কারও গিবত (পরচর্চা, পরনিন্দা) করা।
-মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
-অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করা কিংবা পাঠ করা।
-ঝগড়া-বিবাদ করা।

যেসব কারণে রোজা ভাঙ্গা যায়
যেসব কারণে রমজান মাসে রোজা না রাখা কিংবা রাখলেও ভাঙ্গা যায় তা হলো-
-হঠাৎ ভীষণ পেট ব্যথা শুরু হলে, যা ওষুধ সেবন ছাড়া উপশম হওয়ার মতো নয়।
-সাপ, বিচ্ছু ইত্যাদি কোনো বিষাক্ত প্রাণী দংশন করলে এবং তার চিকিত্সায় রোজা ভাঙ্গার দরকার হলে।
-রোগ দুর্বলতার দরুন রোজা অবস্থায় ভীষণ পিপাসা পেলে এবং তাতে মৃত্যুর ভয় থাকলে।
-গর্ভবতী নারীর গর্ভ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা হলে।
-শিশুর মা সন্তানের দুধ না পাওয়ার আশঙ্কা করলে।
-রোজার কষ্টে প্রাণহানির আশঙ্কা হলে।
-অতি বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে অক্ষম হলে।
-মুসাফির অবস্থায় রোজা রাখতে কষ্ট ও অসুবিধাবোধ হলে।
-স্ত্রী লোকদের হায়েজ (পিরিয়ড) কিংবা নেফাস (বাচ্চা প্রসব পরবর্তী রক্ত) শুরু হলে। হায়েজের নিম্ন সময় তিন দিন, সর্বোচ্চ ১০ দিন এবং নেফাসের সর্বোচ্চ সময় ৪০ দিন। কমের কোনো সীমা নির্দিষ্ট নেই।

রোজার কাফফারা
-স্বেচ্ছায় কোনো খাবার বা ওষুধ খেলে কিংবা ধূমপান করলে।
-স্বেচ্ছায় যে কোনো প্রকারে বীর্যপাত করলে।
-সঙ্গম করলে, যদিও বীর্যপাত না হয়।

এসব অবস্থায় রোজা ভেঙে যাবে। রোজার কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে। কাফফারার জন্য বিরতিহীন দু’মাস (৬০টি) রোজা রাখতে হবে। দু’মাসের মধ্যে যদি কোনো একদিন রোজা ভাঙ্গে, তবে আবার একাধারে দু’মাস রোজা রাখতে হবে। আগের রোজা বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু এরই মধ্যে মহিলাদের হায়েজ শুরু হলে আগের রোজা বাতিল হবে না। পাক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার রোজা শুরু করতে হবে এবং ৬০টি রোজা রাখতে হবে।

রোজা রাখার শক্তি না থাকলে ৬০ জন মিসকিনকে দু’বেলা বা এক জনকে ৬০ দিন দু’বেলা করে তৃপ্তির সঙ্গে খাওয়াতে হবে কিংবা ৬০ জন মিসকিনের প্রত্যেককে একটি করে সদকায়ে ফিতরের মূল্য দেবে।

লেখক: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।