রাসুল (সা.)-এর অন্যতম প্রিয়তমা ও বিচক্ষণ স্ত্রী উম্মে সালমা (রা.) একদিন রাসুল (সা.)-এর কাছে বসা ছিলেন। আখেরাতের প্রস্তুতি নিয়ে নবী (সা.) তখন কথা বলছিলেন।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘উভয়ের মধ্যে যার চরিত্র বেশি সুন্দর, তার সঙ্গে থাকবে। ’ একথা শুনে উম্মে সালমা (রা.) খুব আশ্চার্যান্বিত হন।
রাসুল (সা.) তার অবাক হওয়া দেখে বলেন, ‘হে উম্মে সালমা, শুনে রাখো, সুন্দর চরিত্রের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের সব কল্যাণ লাভ করা যায়। ’ (তাবরানি, হাদিস নং : ২২২/২৩)
রাসুল (সা.) জ্ঞানের দিক থেকে কিংবা নামাজ-রোজায় এগিয়ে থাকা স্বামীর কথা উল্লেখ করেননি। বরং বলেছেন, চরিত্রবান লোকের সঙ্গে থাকবে। কারণ সুন্দর চরিত্র দিয়ে দুনিয়া-আখেরাতের সব কল্যাণ লাভ করা যায়। দুনিয়ার কল্যাণ হলো, সৃষ্টিজীবের অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। আখেরাতে আল্লাহর কাছে তার জন্য থাকে অফুরন্ত সওয়াব।
মানুষের ভালো কাজ যতই হোক না কেন তার চরিত্র মন্দ হলে সব আমলই নিঃশেষ হয়ে যায়। এক নারী রাতে বেশি নামাজ আদায় করত। দিনে রোজা রাখত ও দান-সদকা করতো। অনেক ভালো কাজে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু সে প্রতিবেশীকে কথা-বার্তায় মাধ্যমে কষ্ট দিত। তার আচার-আচারণ ভালো ছিল না। এ কথা শোনে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সে জাহান্নামে যাবে। ’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস নং : ৪৪০/২)
আমাদের প্রিয়নবী রাসুল (সা.) ছিলেন সুন্দর চরিত্রের সর্বোত্তম নমুনা। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী ও কষ্টসহিঞ্চু। তার সততা ছিল সর্বজনবিদিত। কাফের ও অমুসলিমরাও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছে।
প্রথমবার ওহি অবতরণের পর রাসুল (সা.)-এর স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে খাদিজা (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ, আপানাকে আল্লাহ তাআলা কখনও অপমানিত করবেন না। আপনি আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। মানুষের বোঝা বহন করেন। অসহায়ের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। অতিথিদের সমাদর করেন। বিপদগ্রস্থের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। মানুষের আমানত যথাযথভাবে আদায় করেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ০৩, মুসলিম, হাদিস নং : ১৬০)
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৪