ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

তাবলিগ ও ইজতেমা গাইড

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
তাবলিগ ও ইজতেমা গাইড ছবি: জিএম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তাবলিগ শব্দের অর্থ প্রচার। তাবলিগ বলতে ইসলাম ধর্মের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের প্রচার-প্রসারকে বুঝায়।

তাবলিগের বহুল প্রচলিত একটি শব্দ ইজতেমা। ইজতেমা আরবি শব্দ। ইজতেমা বলতে ধর্মীয় কাজে একত্রিত বা সমবেত হওয়াকে বুঝায়। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় তাবলিগের প্রবর্তন করেন। সঙ্গতকারণে তৎকালীন ভারতের প্রচলিত কিছু উর্দু, ফার্সি ও আরবি শব্দ তাবলিগের বিভিন্ন পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, যা এখনও চলমান। পাঠকের সুবিধার্থে এখানে তেমন কিছু শব্দ উল্লেখ করা হলো।

ইজতেমা- সমাবেশ, মহাসমাবেশ। তাবলিগ- পৌঁছানো, প্রচার করা। আমির- দলপতি, নেতা। রাহবার- পথপ্রদর্শক। মামুর- আমিরের অনুসরণকারী। মুতাকাল্লিম- কথক, বক্তা। দাঈ- দ্বীনের পথে আহবানকারী। গাশত- দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে চলাফেরা করা। উমুমি গাশত- জনসাধারণের উদ্দেশ্যে দলবদ্ধভাবে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য গমন। খুসুসি গাশত- বিশেষ কাউকে দাওয়াত দেওয়ার জন্য গমন। তাশকিল- জামাত গঠনের জন্য বিশেষ দাওয়াত। তালিম- দ্বীন শিক্ষার আসরবিশেষ, তাবলিগে সাধারণত ফাজায়েলে আমল নামক একটি কিতাব একজন পাঠ করে অন্যরা তা শুনে এটাকে তালিম বলে। বয়ান- বক্তৃতা। আম বয়ান- সবার উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতা। খাস বয়ান- বিশেষ কোনো শ্রেণীর জন্য প্রদত্ত বক্তৃতা। তায়ারুফি বয়ান- কোনো স্থানে জামাত যাওয়ার পর সেখানকার দেওয়া পরিচিতিমূলক বয়ান।

ছয় নম্বর- তাবলিগ যে ছয়টি মূলনীতির ভিত্তিতে দাওয়াতের কাজ করে তাকে ছয় নম্বর বা ছয় উসূল বলে। ইকরাম- সম্মান দেখানো, সহযোগিতা বা সেবা করা। ইস্তেকবাল- অভ্যর্থনা করা। খেদমত- সেবা করা, এখানে জামাতের সাথীদের খাবার আয়োজনের দায়িত্বকে বুঝায়। মাশওয়ারা- পরামর্শ। সামানা- আসবাবপত্র। খিত্তা- টুকরো জায়গা, ইজতেমা মাঠের এলাকা নির্ধারক স্থান বিশেষ। এক চিল্লা- আল্লাহর রাস্তায় দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে ৪০ দিনের জন্য বেরিয়ে পড়া। তিন চিল্লা- চার মাস মেয়াদে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়া। সাল- এক বছর আল্লাহর রাস্তায় কাটানো। জোড়- বিভিন্ন স্তরের সাথীদের নিয়ে বিশেষ সম্মেলন। শবগুজারি- তাবলিগের মারকাজে রাতযাপন, সাধারণত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত মসজিদে কাটানোকে শবগুজারি বলে। নুসরত- সাহায্য করা অর্থাৎ বহিরাগত জামাতের কাজে সহযোগিতা করা। উসুল- আদায় করা অর্থ হলেও এখানে তাবলিগের জন্য কাউকে রাজী করে বের করে আনা অর্থে ব্যবহৃত হয়। মোজাকারা- পরস্পরে আলাপ-আলোচনা। জুড়নেওয়ালে জামাত- যারা ইজতেমার মাঠ থেকেই জামাতে যাওয়ার জন্য প্রস্তত হয়। এলান- ঘোষাণা। মেহনত- পরিশ্রম। জিম্মাদার- দায়িত্বশীল।

জামাত- দল, সাধারণত একটি জামাতে ১৫/১৬ জন লোক থাকে। হজরতজি- কোনো সম্মানিত ব্যাক্তিকে ভক্তিভরে এ নামে ডাকা হয়। তবে তাবলিগের পরিভাষায় তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস (রহ.), ইউসুফ (রহ.) ও এনামুল হাসান (রহ.)- এই তিনজনকে হজরতজি নামে ডাকা হয়। আখেরি মুনাজাত- শেষ মুনাজাত, ইজতেমা শেষে কৃত মুনাজাতকে আখেরি মুনাজাত বলা হয়। মুরুব্বি-অভিভাবক, এখানে নেতৃস্থানীয়দের বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। মারকাজ- কেন্দ্র, তাবলিগের কাজ যেখান থেকে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে তাবলিগের মূল মারকাজ হলো- কাকরাইল মসজিদ। আর দিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদ হলো- বিশ্ব তাবলিগের মূল কেন্দ্র। এছাড়া প্রত্যেক জেলায় একটি করে তাবলিগের মারকাজ রয়েছে। হালকা- এলাকাভিত্তিক ভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।