ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

বিখ্যাত ব্লু মসজিদ

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৫
বিখ্যাত ব্লু  মসজিদ

তুরস্কের অন্যতম শহর ইস্তাম্বুলের বসফরাস প্রণালীর তীর ঘেঁষে মুসলিম ঐতিহ্যের নিদর্শন কোলে নিয়ে মাথা উঁচু দাঁড়িয়ে আছে ‘সুলতান আহমেদ মসজিদ’। তবে মসজিদটি তার নীল গম্বুজের কারণে সবার কাছে ‘ব্লু  মসজিদ’ নামে বেশি পরিচিত।



মসজিদটি ১৬০৯ থেকে ১৬১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে উসমানি সুলতান প্রথম আহমেদ কর্তৃক নির্মিত হয়। ঐতিহাসিক এ মসজিদটির স্থপতি ছিলেন- মুহাম্মদ আগা।

সুলতান আহমেদ মসজিদটি তুর্কি স্থাপত্যের এক অনন্য উদাহরণ। এর মিনার ও গম্বুজগুলো সীসা দ্বারা আচ্ছাদিত এবং মিনারের ওপরে সোনার প্রলেপযুক্ত তামার তৈরি ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে।

মসজিদটি নীল, সবুজ ও সাদা টাইলস দিয়ে নির্মিত। মসজিদের বড় গম্বুজটি নীল টাইলস দিয়ে নির্মিত হওয়ায় ইউরোপীয়দের কাছে এ মসজিদটি ‘ব্লু  মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত।
১৯৩৪ সালে ‘হাজিয়া সুফিয়া’কে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করার পর ইস্তাম্বুলের প্রধান মসজিদে পরিণত হয় ব্লু  মসজিদ।

মূলত সুলতান আহমেদ মসজিদকে আশেপাশের চত্বরসহ ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে বড় কমপ্লেক্স হিসেবে গন্য করা হয়। এ কমপ্লেক্সের আওতায় একটি মাদ্রাসাও রয়েছে। রয়েছে কিছু দোকান ও হল রুম।

মসজিদটি ইস্তাম্বুলের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। তুরস্ক ভ্রমণ করেছেন আর এই মসজিদ দেখেননি- এমন পর্যটকের সংখ্যা খুব কমই আছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস এই মসজিদ পরিদর্শন করেন ও সেখানে প্রার্থনা করেন। তিনি ইস্তাম্বুলের গ্র্যান্ড মুফতির পাশে প্রার্থনায় দাঁড়ান। দুই মিনিট প্রার্থনা চলাকালে পোপ নিজের দুই হাত পরিবেষ্টন করে রাখেন।

পোপ ফ্রান্সিস তার জুতা খুলে মসজিদটিতে প্রবেশ করেন। পোপ মসজিদে পৌঁছানোর পর ইস্তাম্বুলের গ্র্যান্ড মুফতি রামি ইরান তাকে স্বাগত জানান।

২০০৬ সালে তার পূর্বসূরি পোপ বেনেডিক্ট অনুরূপ প্রার্থনা করেছিলেন এই মসজিদ পরিদর্শনে আসেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে এ মসজিদ পরিদর্শন করেন। মসজিদ পরিদর্শনকালে তিনিও জুতা খুলে মসজিদে প্রবেশ করেন।

তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেদেশে ৮১ হাজার ৯৮৪টি মসজিদ রয়েছে। তন্মধ্যে শুধুমাত্র ইস্তাম্বুলেই রয়েছে ৩ হাজার ৮৭টি মসজিদ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কুনিয়া শহর। এখানে আছে ৩ হাজার ২৫টি মসজিদ। ২ হাজার ৭৮৮টি মসজিদ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজধানী আঙ্কারা।

তুরস্কে এত মসজিদ থাকা সত্ত্বেও দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলে দেশটির সর্ববৃহৎ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, এ মসজিদটি আগামী ২০১৬ সাল নাগাদ উদ্বোধন করা হবে। ইতোমধ্যেই এ মসজিদের  ৬০ ভাগ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ইস্তাম্বুলের মসজিদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ১৫ হাজার বর্গমিটার আয়তনের ওপর নির্মিত হচ্ছে মসজিদটি। এ মসজিদে একসাথে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। নির্মিতব্য মসজিদে ৬টি মিনার ও একটি গম্বুজ থাকবে। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৯০ মিটার এবং গম্বুজের উচ্চতা ৬০ মিটার।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের প্রস্তাবক্রমের এ মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘন্টা, মার্চ ০৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।