ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

দুবাইয়ে নির্মিত হচ্ছে হজরত বেলাল (রা.)-এর ওপর বিশেষ এ্যানিমেশন

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৫
দুবাইয়ে নির্মিত হচ্ছে হজরত বেলাল (রা.)-এর ওপর বিশেষ এ্যানিমেশন

দুবাইয়ের ‘বারাজুন’ এ্যানিমেশন কোম্পানিতে আরব স্পেশালিস্টদের দ্বারা নির্মিত হচ্ছে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম সাহাবি ও ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বেলাল (রা.)-এর ওপর একটি থ্রিডি এ্যানিমেশন।

সম্প্রতি অন ইসলাম ওয়েব সাইট এমনই একটি খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়েছে, এ্যানিমেশনটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। এতে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্যতম কৃষ্ণাজ্ঞ হজরত বেলাল (রা.)-এর জীবনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

এ্যানিমেশনে বেলাল নামক নিগ্রো যুবকের জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। যে শৈশব থেকে জীবন যুদ্ধে লিপ্ত। সে এমন এক সমাজের লোক যে সমাজ অন্যায়, অত্যাচার ও অনাচারে পূর্ণ।

এ্যানিমেশটি ইংরেজি ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে যাতে ইংরেজি ভাষাভাষিরাও হজরত বেলাল (রা.)-এর জীবনী সম্পর্কে পরিচিত হতে পারেন। যিনি ছিলেন একজন কালো কৃতদাস এবং মহানবি (সা.)-এর সময়ে সৌদি আরবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মহানবি (সা.)-এর ঘনিষ্ট সাহাবিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান।

উল্লেখ্য যে, এ্যানিমেশন নির্মাতাদের ঘোষণার ভিত্তিতে ২০১৫ সালের শেষের তিন মাসের যে কোনো সময়ে এর প্রদর্শন শুরু হবে।
এ্যানিমেশন প্রযোজনা সূত্রে জানা গেছে, গল্পে ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে এমন যোদ্ধার গল্প যার জীবন অত্যন্ত সংগ্রামমুখর। যে যুবক জীবনে পরিবর্তনের খোঁজে সর্বদা সত্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়।

হজরত বেলাল (রা.)-এর ওপর এ্যানিমেশন নির্মাণের কারণ

হজরত বেলাল (রা.)-এর পুরো জীবন হলো অত্যন্ত সংগ্রামমূখর। জাহেলিয়াতের ছোঁয়া যখন আরবের মানুষের জীবনকে পরিচালিত করছিল তখন তিনি সত্যকে গ্রহণ করেছিলেন। অন্যের গোলাম হয়েও ইসলাম গ্রহণের তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণার সাহস দেখিয়েছিলেন। এ জন্য তার ওপর নেমে আসে সীমাহীন নির্যাতন। জীবনের এমন চরম দুঃসময়ে তার সম্বল ছিল শুধু আল্লাহ এবং রাসূল (সা.)-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। এই বিষয়টিই এ্যানিমেশনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বস্তুত হজরত বেলালের জীবন মুসলমানদের জন্য শিক্ষণীয়; এ্যানিমেশনে এটাই তোলে ধরা হয়েছে।

এক নজরে হজরত বেলাল (রা.)

হজরত বেলাল (রা.) আফ্রিকার আবিসিনিয়ায় (বর্তমানে ইথওপিয়া) জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে তার নাম ছিল আবু আবদুল্লাহ ও আমর। আবু রাবিহা নামে তার এক সহোদর ছিল।

হজরত বেলাল (রা.)-এর পিতার নাম রেবাহ এবং মাতার নাম হামামা। তারা দু’জনই বনি জুমহারের এক পরিবারে দাসদাসীর কাজ করতেন।

হজরত বেলাল (রা.) ছিলেন, কাফ্রি বা নিগ্রো। তাই শরীরের রঙ ছিল কালো। চোখ দু’টি ছিল গাঢ় রক্তবর্ণ। তার ঠোঁট ছিল মোটা। তার শরীর ছিল বেশ দীর্ঘ। তার গলার আওয়াজ ছিল একই সঙ্গে গম্ভীর, সুরেলা ও মধুর।

হজরত বেলাল (রা.) ছিলেন ক্রীতদাসের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। ইসলাম গ্রহণ করার সময় তিনি যুবক ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর। তিনি ছিলেন রাসূল (সা.)-এর প্রিয় সাহাবাদের অন্যতম।

মক্কা বিজয়ের পর রাসূল (সা.)-এর নির্দেশে কাবা শরিফে প্রথম আজান দিয়েছিলেন হজরত বেলাল (রা.)। তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন। ইসলামের প্রায় প্রতিটি যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে ইসলামকে জয়ী করার জন্য অসংখ্য জিহাদে অংশগ্রহণ করেন। তার অত্যাচারী মনিব উমাইয়া কাফের অবস্থায় তার হাতে নিহত হন।

হজরত বেলাল (রা.) হিজরি ৬০ সনে দামেস্কে ইন্তেকাল করেন। তাকে সেখানেই দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘন্টা, মার্চ ১০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।