ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

‘পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা’

২০৫০ সাল নাগাদ ইসলাম হবে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৫
২০৫০ সাল নাগাদ ইসলাম হবে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম

বিশ্বে ২০৫০ সাল নাগাদ মুসলিম জনসংখ্যা হবে খ্রিস্টানদের প্রায় সমান। ইসলাম হবে এ দুনিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মবিশ্বাস।

বর্তমান তথ্যের ভিত্তিতে করা এক হিসাবে (প্রজেকশান) এমনটিই দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’- এর ধর্মীয় রূপরেখাবিষয়ক এক সমীক্ষায় এ কথা বলা হয়েছে। সারা বিশ্বের জন্মহার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারা এবং ধর্মান্তরের পরিসংখ্যানের তথ্যের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় গত ০২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পিউ রিসার্চ সেন্টার। পিউ সেন্টারের এ গবেষণা বিশ্বের প্রভাবশালী সব গণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। পিউ সেন্টার তাদের ওয়েবসাইটে পুরো গবেষণা কর্মটি বিভিন্ন স্মারণী সমেত প্রকাশও করেছে।

গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বিস্তার লাভকারী ধর্ম ইসলাম। আগামী ২০৭০ সালের পর বিশ্বে ইসলাম হবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্ম। আর ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত ইন্দোনেশিয়াকেও ছাড়িয়ে যাবে। মুসলিম জনসংখ্যার দিক দিয়ে ভারত ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে গেলেও দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে।

সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের সংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ গিয়ে দাঁড়াবে ২৭৬ কোটিতে। ওই সময় মুসলমানরা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হবে। ২০৫০ সালে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৯শ’ কোটি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গবেষণা বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে একটা সমতা বজায় থাকবে। খ্রিস্টানদের সংখ্যা বাড়লেও মুসলমানদের হারে বাড়বে না। মুসলমানদের সংখ্যা হবে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ এবং খ্রিস্টানদের সংখ্যা ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন (মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ) গিয়ে দাঁড়াবে। যদি এই ধারা চলতে থাকে তাহলে ২০৭০ সালের পর বিশ্বে ইসলামই বেশি জনপ্রিয় ধর্ম হবে। ২০৫০ সালে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ হবে মুসলিম যা ২০০৯ সালে ছিল ৫ দশমিক শতাংশ। অর্থা‍ৎ ২০৫০ সালে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের বেশি হয় মুসলমান কিংবা খ্রিস্টান হবে। একই সময়ে ইউরোপে হিন্দুদের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। বতর্মানে সেখানে হিন্দুদের সংখ্যা ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন। অভিবাসনের ফলেই এটা ঘটবে। ২০১০ সালে বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন যখন খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন।

গবেষণায় জানানো হয়, বিশ্বে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ৩৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। এর ফলে জনসংখ্যা ১ বিলিয়ন থেকে ২০৫০ সালে ১ দশমিক ৪ বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াবে যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। বিশ্বের জনসংখ্যার আধিক্যের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এছাড়া কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন মানুষের সংখ্যা হবে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। বর্তমানে এরা জনসংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আগামী ৪ দশকে বিশ্বে মুসলিমদের সংখ্যা দ্রুতহারে বাড়তে থাকলেও বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় জনসংখ্যা হবে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। ২০১০ সালে বিশ্বে খ্রিস্টান জনসংখ্যা ছিল ২.১৭ বিলিয়ন, যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১.৬ বিলিয়ন।   সেখানে ২০৫০ সালে বিশ্বে খ্রিস্টান জনসংখ্যা হবে ২.৯ বিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ। মুসলিম জনসংখ্যা হবে ২.৮ বিলিয়ন যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। আর বৌদ্ধদের সংখ্যা বাড়বে শুধুমাত্র চীন, জাপান ও থাইল্যান্ডের মতো কয়েকটি দেশে।

বিশ্বের ১৭৫টি দেশের ২ হাজার ৫০০ জরিপ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করেছে পিউ। তবে তারা এটাও বলেছে যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বড় ধরণের সামাজিক, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক পরিবর্তন, সশস্ত্র যুদ্ধ, ইত্যাদি বিষয়গুলো এই স্বাভাবিক প্রবণতাকে ব্যাহতও করতে পারে। তা না হলে, ২০৫০ সাল নাগাদ এমনটাই হবে বিশ্বের ধর্মভিত্তিক মানচিত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘন্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।