ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ঋণমুক্তির দোয়া

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
ঋণমুক্তির দোয়া

পারস্পরিক সাহায্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে মানুষের সামাজিক জীবন। সুখে-দুঃখে একে অন্যের পাশে দাঁড়ায় বন্ধু হয়ে।

অভাবে ঋণ আদান-প্রদানও করে একে অন্যের সঙ্গে। ইসলামে ঋণ গ্রহণ বৈধ। নবী করিম (সা.) উপবাস থাকলেও দুনিয়াবি কারণে ঋণ করেননি। তবে ইসলামের কাজে ধার-কর্জ করেছেন বলে হাদিসে পাওয়া যায়।

হজরত আবু রাফে (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি উট ধার নেন। অতঃপর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে উটটি এলে আবু রাফেকে আদেশ দেওয়া হয়;  যেন সেই ব্যক্তির উট ফেরত দেন। -সহিহ মুসলিম

ইসলাম ঋণ গ্রহণকে সীমিত আকারে বৈধতা দিয়েছে। কিন্তু বিলাসিতার জন্য ঋণ করা কিছুতেই ইসলামসম্মত নয়। তবে বিপদে-আপদে বিভিন্ন প্রয়োজনে কারো কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের অনুমতি দিলেও তা পরিশোধের নির্দেশও দিয়েছেন কঠোরভাবে।

সমাজে কিছু লোক আছেন, যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পাওনাদারকে ঠকানোর মনোবৃত্তি নিয়েই ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করেন। যা প্রত্যাশিত আচরণ নয়।

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে পরকালে তার নেক আমল দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। না হলে গুনাহের বোঝা মাথায় নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে।

ঋণ নিয়ে উচ্চাভিলাষ চরিতার্থকারী ঋণখেলাপির জানাজা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) পড়তেন না। তবে ঋণ পরিশোধের প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অপারগতাবশত সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারে না, এ ধরনের ঋণখেলাপিকে অবকাশ দিয়েছে ইসলাম।

অনিবার্য কারণে ঋণ পরিশোধে অপারগতা দেখা দিলে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া কিছুতেই উচিত নয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই অবহিত করতে হবে ঋণদাতাকে। সেই ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করতে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে পার্থিব প্রচেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করতে হবে।

তিরমিজি শরিফের এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, একবার হজরত আলী (রা.)-এর কাছে এক ব্যক্তি তার ঋণ পরিশোধের জন্য কিছু সাহায্য চাইলেন। এসময় হজরত আলী (রা.) তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে কয়েকটি শব্দ শিক্ষা দেব না, যা আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন? যদি তুমি এটা পড় তাহলে আল্লাহই তোমার ঋণমুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নিবেন। যদি তোমার ঋণ পর্বতসমানও হয়।

এরপর হজরত আলী (রা.) ওই ব্যক্তিকে বললেন পড়-

اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনী বিফাজলিকা আম্মান সিওয়াকা।

অর্থ: হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট কর। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে স্বচ্ছলতা দান কর।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার কাছে ঋণমুক্তির জন্য সাহায্য কামনা করলে, আশা করা যায় আল্লাহতায়ালা ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে সব ধরনের ঋণ থেকে মুক্ত করবেন।



বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।