ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ

মো. হাবিবুর রহমান, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ

নবাব শায়েস্তা খানের আমলে তৈরি একটি মসজিদ কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে। কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ঝিনাইদহগামী সড়ক ধরে প্রায় ১১ কিলোমিটার এগিয়ে গেলে মসজিদ পাওয়া যাবে।

কুষ্টিয়ার আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামে এ প্রাচীন স্থাপত্যটি বিদ্যমান। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি যে মোগল যুগের, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি যে একটি পুরনো মসজিদ, তারও অনেক প্রমাণ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবাব শায়েস্তা খানের নামানুসারে গ্রামটির নাম ছিল শায়েস্তাপুর। কালক্রমে মানুষের মুখে মুখে শায়েস্তাপুর উচ্চারিত হয়ে আসতে আসতে অপভ্রংশে এসে শায়েস্তাপুর থেকে স্বস্তিপুর নামকরণ হয়। এরপর থেকেই স্বস্তিপুর হিসাবে গ্রামটি প্রচারিত হয়ে আসছে।

শায়েস্তা খানের আমলে এই স্বস্তিপুর গ্রামের পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থেকে একটি শাহী রাস্তা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা থানা হয়ে এসে কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে ফরিদপুর জেলার মাঝখান দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত চলে গেছে। এখন একটি মরা নদীর স্মৃতি চিহ্ন থেকে অনুমান হয় যে, এক সময় এই নদীটি তরতর বেগে ছুটে চলত স্বস্তিপুর গ্রামের ভিতর দিয়ে।

অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, শাহী ফৌজদের বিশ্রামকালে পথিমধ্যে নামাজ আদায়ের জন্য এই মসজিদটি তারা তৈরি করেছিল। স্বস্তিপুর মসজিদটির ৪ কোনে চারটি থামের ওপর ৪টি ছোট গম্বুজ শোভা পেত। আর মাঝের গম্বুজটি ছিল অন্যগুলোর তুলনায় কিছুটা বড়। এই মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব ০.৯১ মিটার এবং পিলারসহ তা ১.০১ মিটার। এটি একটি ছোট মসজিদ এবং তাতে মাত্র এক সারি মানুষ দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারেন। এখন অবশ্য মসজিদের পূর্ব দেয়াল সংলগ্ন বড় একটি বারান্দা যুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে মসজিদটিতে যথেষ্ট সংস্কার কাজ হয়েছে। মসজিদটি সংস্কারে পর সংস্কার হতে হতে এর প্রাচীনতত্ত্বের স্মৃতি চিহ্ন আজ বিলুপ্তির পথে। নবাব শায়েস্তা খানের আমলে এ মসজিদটি নির্মাণ সম্পর্কে জনপ্রবাদ আছে। আদি মসজিদটি আকারে ছোট ছিল। সেটি ধ্বংস হয়ে গেলে নতুন করে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। এসব বক্তব্যের সর্বাংশে সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েও বলা যায়, বর্তমান মসজিদটিও মোগল আদলকে কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে।

বর্তমানে মসজিদটির খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা সিরাজুল ইসলাম নিজামী। তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মানুষ এখনও ভিড় করেন। তিনি প্রশাসনসহ দয়িত্বশীল মহলের কাছে আবেদন করেন, মসজিদটি সংস্কারের।

প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে থাকে পুরো। অনেকেই এখানে বিভিন্ন মান্নত করে সিন্নিও প্রদান করে। মসজিদের পাশে এর জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।



বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।