ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

আলবেনিয়ার নির্মিত হচ্ছে বলকান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
আলবেনিয়ার নির্মিত হচ্ছে বলকান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ

বলকান অঞ্চল (The Balkans) বলতে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি ঐতিহাসিক অঞ্চলকে বোঝায়। এর পূর্বে কৃষ্ণ সাগর, পশ্চিমে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর, দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর।

দানিউব, সাভা ও কুপা নদীগুলো অঞ্চলটির উত্তর সীমানা নির্ধারণ করেছে। বুলগেরিয়া থেকে পূর্ব সার্বিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বলকান পর্বতমালার নামে অঞ্চলটির নামকারণ করা হয়েছে। বলকান অঞ্চলের আয়তন প্রায় ৫৫০,০০০ বর্গকিলোমিটার। এ অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি লোকের বাস।

আলবেনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনিগ্রো, গ্রিস, ম্যাসিডোনিয়া, সার্বিয়া, মলদোভা, রোমানিয়া ও স্লোভেনিয়াকে বলকান অঞ্চলের অন্তর্গত বলে মনে করা হয়

সেই বলকান অঞ্চলের অন্তর্গত আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় দেশটির পার্লামেন্টের পাশে একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণের কাজ চলছে। মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি হবে বলকান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ। খবর দ্য ইকোনমিস্টের।

এ মসজিদটি আলবেনিয়ায় তুরস্কের অর্থায়নে পরিচালিত অনেক প্রকল্পের একটি। তুরস্ক ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা প্রকল্প ‘দায়ানেত’-এর আওতায় বিশ্বের ২৫টি দেশে ১০০টিরও বেশি মসজিদ ও স্কুল নির্মাণ করছে। বসনিয়া, কসোভো, ফিলিপাইন ও সোমালিয়ায় যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ ও ইসলামি স্থাপনা পুনর্নির্মাণ করেছে তারা। ২০১৪ সালে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বাহিনীর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ সংস্কারের কাজ করেছে দায়ানেত।

এসব কাজে তুরস্ক প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বা ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। দায়ানেত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ অর্থ ব্যক্তিগত দান থেকে প্রদান করা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ওসমানি খিলাফার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মসজিদ ও ইমারতের রাজনীতি করছেন। পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ ও কমিউনিস্ট শাসিত দেশ আলবেনিয়ায় পার্লামেন্টের পাশেই নির্মিত হচ্ছে সুদৃশ্য মসজিদটি। মসজিদটি নির্মাণে ‘ওসমানীয়’ নির্মাণশৈলী অনুসরণ করা হয়েছে।

আলবেনিয়ার জনগণ ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল। কমিউনিস্ট সরকার ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানদের গির্জা নির্মাণে বাঁধা না দিলেও মসজিদ নির্মাণে প্রশ্ন তোলায় দেশের অনেক সাধারণ মুসলমান ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

২০১০ সালে মসজিদ নির্মাণে তুরস্ক প্রস্তাব দিলেও ২০১৩ সালের আগে অনুমতি পাওয়া যায়নি। তুরস্ক আলবেনিয়ায় মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি ছয়টি সুসজ্জিত ইসলামিক সম্মেলন সেন্টারসহ ২৪৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

আলবেনিয়ার ইসলামপন্থী জনগণ মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর পরিবর্তে তুরস্ককে তাদের প্রধান মিত্র মনে করে। তিরানার গ্রান্ড মুফতি আলি গুরা বলেন, ‘তুরস্কের ইসলামের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। ’

২০১৫ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান রাষ্ট্রীয় সফরে আলবেনিয়ায় এসে মসজিদটির উদ্বোধন করেন এবং সে সময় জনতার উপস্থিতি প্রমাণ করে এরদোগান আলবেনিয়ায়ও দারুণ জনপ্রিয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।