ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

বরগুনায় জেলা ইজতেমা শুরু বৃহস্পতিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
বরগুনায় জেলা ইজতেমা শুরু বৃহস্পতিবার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরগুনা: ১৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বরগুনা জেলা ইজতেমা ২০১৬ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে।

২০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ ইজতেমা।

ইজতেমায় বরগুনার ছয়টি উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা অংশ নেবেন।

ইতোমধ্যেই ইজতেমাকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের মাঠে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে আয়োজকরা। প্যান্ডেল নির্মাণের জন্য বাঁশের খুঁটি পুঁতে পুরো ময়দান জুড়ে সামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওজু-গোসল ও টয়লেটসহ প্রয়োজনীয় পানির জন্য উপজেলা পরিষদের দু’টি দিঘীর চারপাশে বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ওজুখানা, গোসলখানাসহ পর্যাপ্ত টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে।

বিশ্ব ইজতেমার মতো এখানেও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা, কল-কারখানার শ্রমিক-মালিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ইজতেমা মাঠে প্রস্তুতির কাজে সহায়তা করছেন।

স্বেচ্ছাশ্রমে ইজতেমার মাঠে কাজ করতে আসা বরগুনা আলিয়া মাদ্রসার ছাত্র মহিবুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আল্লাহর দরবারে বিভিন্ন ফরিয়াদ জানাতে আসবেন। তাদের সেবায় কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

স্থানীয় ডিকেপি রোডের মো. রাজু বলেন, আমি বেসরকারি একটি সংস্থায় চাকরি করি। ইজতেমা মাঠের পাশেই আমার বাড়ি। যখনই সুযোগ পাই আমি এসে এখানে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করি।

ইজতেমার মাঠের প্রস্তুতির কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা তাবলীগের মুরুব্বি মো. হারুন মৃধা বলেন, সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

বরগুনা পৌরসভার মেয়র মো. শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বরগুনায় প্রথমবারের মতো ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাই পৌরসভার পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করছি এখানে দূর-দূরান্ত থেকে যে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আসবেন তাদের কোনো অসুবিধা হবে না।

ইজতেমায় আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সুস্থতার দিকে খেয়াল রেখে বরগুনা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে অস্থায়ী স্বাস্থ্য ক্যাম্প। এছাড়াও বরগুনা হোমিও প্যাথিক মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকেও একটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. রুস্তুম আলী বাংলানিউজকে বলেন, তাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিকেল অফিসারদের তালিকা ও ডিউটি রোস্টার করা হচ্ছে। মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রাখা হবে ইজতেমা মাঠে।

বরগুনা জেলা ইজতেমা ২০১৬ সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন করতে বরগুনা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে গোটা ইজতেমা মাঠ।

নিরাপত্তার বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বাংলানিউজকে বলেন, ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য বিদেশি নাগরিকদের প্রতি আলাদা নজরদারীর ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও ইজতেমা মাঠে পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সার্বক্ষণিক একটি মোবাইল টিমের ব্যবস্থা ও পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স সব সময় প্রস্তুত থাকবে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক ড. মহা. বশিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। আশপাশের খাবারের দোকানে ও ইজতেমা এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।