ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

তিন বছর বয়সেই কোরআন মুখস্থ করেছে নাইজেরিয়ার মুহাম্মদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৬
তিন বছর বয়সেই কোরআন মুখস্থ করেছে নাইজেরিয়ার মুহাম্মদ ছবি: সংগৃহীত

উত্তর নাইজেরিয়ার জারিয়া (Zaria) শহরের তিন বছরের এক শিশু সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। প্রবল প্রতিভাধর ও মুখস্থ শক্তির অধিকারী ক্ষুদে এই হাফেজের নাম মুহাম্মদ শামসুদ্দিন আলিয়্যু (Muhammad Shamsuddeen Aliyu)।

খবর নাইজেরিয়ান পত্রিকা ডেইলি ট্রাস্টের।

আলোচিত এই শিশুটির বয়স যখন দেড় বছর, তখনই সে অ্যাঙ্গো আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে (Ango Abdullah International School) ভর্তি হয়। সেখানে সে তিন বছরে পা দেওয়ার আগেই পুরো কোরআন মুখস্থ করে ফেলে।

অ্যাঙ্গো আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটি মূলত একটি আন্তর্জাতিক কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে শিশুদেরকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোরআন শেখানো হয়।

অবাক করার মতো বিষয় হলো, এখানে এক বছরের কিছু বেশি বয়সী ছাত্র ভর্তি করার বিষয়টি। তবে এটা নাইজেরিয়ানদের ঐতিহ্য বিশেষ। তারা খুব অল্প বয়স থেকে ছেলে শিশুদের আবাসিকভাবে রেখে কোরআন শিক্ষা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিয়ে থাকে।

অ্যাঙ্গো আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটি তেমন একটি স্কুল। এখানে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন অংশের শিশুদের মাতৃদুগ্ধ ছাড়ার পরপরই ভর্তি করা হয় কিংবা এই স্কুলে পাঠাতে বাবা-মায়েদের উদ্বুদ্ধ করা হয়।

এই স্কুলেই মুহাম্মদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়। তার অভিভাবকদের বিশ্বাস ছিলো, কোরআন মুখস্থ করার জন্য মুহাম্মদের মেধা প্রস্তুত।

মুহাম্মদের বাবা এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. আলিয়্যু শামসুদ্দিন (Dr. Aliyu Shamsuddeen) বলেন, এই বয়সেই ছেলেদের ভর্তির উদ্দেশ্য হচ্ছে- এ সময় মস্তিষ্ক সহজে জ্ঞান ও শিক্ষা রপ্ত করতে পারে।  

তারা বিশ্বাস করেন, যখন শিশুরা মায়ের দুধ পান ছেড়ে দেয়, তখন তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। যা শেখানো হয়, সহজেই ধরতে পারে। এ চিন্তা করে তারা এক বছর বয়স থেকে শিশুদের ভর্তি করান। বিশেষ করে কোরআন শিক্ষার প্রতি নজর রাখেন।
 
এখানে মুহাম্মদ আলিয়্যু ছাড়াও কম বয়সে কোরআন মুখস্থ করেছে অনেক শিশু। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে তার পার্থক্য হচ্ছে- মুহাম্মদ আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে সক্ষম হয়েছে।

যখন সে আলিয়্যু স্কুলে যেতে শুরু করে, তখন তার মা খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। এত ছোট শিশু কী করে দীক্ষা নেবে? কিন্তু তার প্রতিভা বিকশিত হতে শুরু করলে মুহাম্মদের মা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

মুহাম্মদ জারিয়ার স্থানীয় পর্যায়ে কোরআনে তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। স্থানীয় প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর সে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করে। যা তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নাইজেরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ এনে দেয়। সে সৌদি আরবে শিশু বিভাগের প্রতিযোগিতায় সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়।  

কোরআন মুখস্থ ছাড়াও মুহাম্মদ নাইজেরিয়ার স্থানীয় ভাষা বাদে আরবি ও ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারে। যদিও বয়সের কারণে তার কোরআন পাঠের উচ্চারণ অতটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু গড়গড়িয়ে, কোনো কষ্ট ছাড়াই কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করতে করতে পারে।

মুহাম্মদের ব্যাপারে জারিয়া’র তুদুন জুকুন (Tudun Jukun) জামে মসজিদের প্রধান ইমাম উস্তাদ বসির লাওয়াল (Bashir Lawal) বলেন, এটা আল্লাহর কুদরতের লক্ষণ। তার কুদরত বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিন বছর বয়সী এক শিশু কোরআন মুখস্ত করার তওফিক পেয়েছে।

তার দাবী, ইসলামের পূর্ববর্তী প্রজন্মের ইতিহাসে মাত্র তিন বছর বয়সী কোনো শিশুর সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করার নজির নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, অাগস্ট ০৮, ২০১৬
এসএমএন/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।