ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

প্রযুক্তি ইসলামের কাজে সহায়ক হতে পারে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
প্রযুক্তি ইসলামের কাজে সহায়ক হতে পারে ইসলাম ও প্রযুক্তি আদৌ সাংঘর্ষিত নয়, বরং প্রযুক্তি ইসলামের কাজে সহায়ক হতে পারে

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, আল্লাহ এমন অনেক কিছুই সৃষ্টি করেন যা তোমরা জান না।’ –সূরা নাহল: ৮

প্রতিনিয়ত বিজ্ঞান প্রযুক্তির নতুন আবিষ্কার প্রকৃতপক্ষে এ আয়াতেরই বাস্তবরূপ। আর আল্লাহতায়ালা যা সৃষ্টি করেন তা কোনো না কোনোভাবে মানুষের উপকারের জন্যই।

সুতরাং নতুন নতুন প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপকারের সঙ্গে মানবিক সীমারেখা রেখে এগুলোকে পার্থিব ও ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করাই যুক্তিসঙ্গত।

প্রায়ই অনেককে বলতে শুনি, ইসলাম ও প্রযুক্তির মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই, প্রযুক্তি এবং ইসলামকে কখনও এক করা যাবে না। প্রযুক্তি ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রযুক্তি মানুষকে দিন দিন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এ ধারণা ঠিক নয়, ইসলাম ও প্রযুক্তি আদৌ সাংঘর্ষিত নয়। বরং প্রযুক্তি ইসলামের কাজে সহায়ক হতে পারে। প্রযুক্তির সাহায্যে ইসলামের কাজ করা এখন সহজ হয়েছে।  

অনেককে এটাও বলতে শুনেছি মিডিয়া ও প্রযুক্তি মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। অনেকের ধারণা মিডিয়া হলো শুধুমাত্র একটা বিনোদন মাধ্যম। এমন কথারও কোনো ভিত্তি নেই। আসলে প্রতিটি বিষয়েরই ভালো-মন্দ দু’টি দিক রয়েছে। আর এ ভালো-মন্দটা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর ব্যবহারের ওপর।

ইন্টারনেট এখন অধিকাংশ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্ণ একটা দিন তো দূরের কথা, মাত্র কয়েক ঘণ্টাও মানুষ এখন ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। ইন্টারনেটে প্রায় সব বিষয়ের তথ্যই রয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে অনেকে তথ্যও পাওয়া যায় এখানে। ইসলামের ইতিহাস, হজরত নবী করিম (সা.)-এর জীবনী, নবী যুগের অবস্থা, ইসলামি গ্রন্থ, কোরআনের তাফসির, হাদিসের গ্রন্থ ও এসবের ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।  

ইন্টারনেটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো- ইউটিউব। ইউটিউবে নানা বিষয়ের চ্যানেল আছে। সেসব চ্যানেলে ইসলামি বক্তৃতা পাওয়া যায়। তাফসিরুল কোরআন, সিরাত ও ফেরাকে বাতেলার মতো বড় বড় সভার বক্তৃতাগুলো এখানে সংরক্ষিতভাবে পাওয়া যায়। যে কারণে অনেক মানুষ ঘরে বসেই ইসলামের অসংখ্য বিষয় শিখতে পারছে খুব সহজে।  

বর্তমানে যোগাযোগ মাধ্যমের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো- ফেসসবুক। সমাজের ছোট-বড়, যুবক, বৃদ্ধ, ধনী-গরিব প্রায় সবাই এখন ফেসবুকের সঙ্গে পরিচিত। ফেসবুক জগৎটাই অন্যরকম। যদিও তার ইতিবাচক দিক থেকে নেতিবাচক দিক বেশি কিন্তু তার এ ভালো-মন্দটা নির্ভর করে ব্যবহারের ওপর।

ফেসবুকেও এখন অনেক ইসলামি পেজ আছে। যেগুলোতে ইসলামের অনেক শিক্ষণীয় বিষয় পোস্ট করা হয়। কোরআন-হাদিসের তথ্যও পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলোর অধিকাংশই ভুলে ভরা। এখানে সম্পৃক্ত হয়ে ইসলাম বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাজ করতে হবে।  

এখন মানুষের হাতে হাতে আছে স্মার্ট ফোন। ধার্মিক মানুষের ধারণা স্মার্ট ফোন তরুণ প্রজন্মের সময় নষ্টের অন্যতম কারণ। কিন্তু এ স্মার্ট ফোন অনেক উপকারেও আসে। এখানে কোরআন-হাদিস এবং অনেক বড় বড় গ্রন্থ রাখা যায়। আজানের সময় এলার্ম দেওয়া, দিক নির্ণয় এমন বহুবিধ সুবিধাই পাওয়া যায় স্মার্ট ফোন থেকে।

কিছু মানুষের ধারণা প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া এগুলো বর্তমান প্রজন্মের পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণ। এমন ধারণা পুরোপুরি ঠিক না। আসলে বর্তমান প্রজন্ম এগুলো থেকে অনেক কিছু শিখছেন। প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের সুব্যবহারের মাধ্যমেই তো তারা ভবিষ্যতে ইসলামকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে প্রচার করতে পারবেন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।