ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

‘অর্থ নয়, মানুষকে বশ করো উত্তম ব্যবহারে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
‘অর্থ নয়, মানুষকে বশ করো উত্তম ব্যবহারে’ ইসলাম সৎ স্বভাব, সৌজন্যবোধ, সত্য নিষ্ঠা ও সততার যে শিক্ষা আমাদের দিয়েছে- তা আমরা পারস্পরিক ব্যবহারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারি

মানুষের সৎ আচরণের মধ্যে সততা একটি অন্যতম গুণ। ইসলাম সৎ স্বভাব, সৌজন্যবোধ, সত্য নিষ্ঠা ও সততার যে শিক্ষা আমাদের দিয়েছে- তা আমরা পারস্পরিক ব্যবহারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারি।

সততা রক্ষা এবং সততা অর্জন করা একজন মোমিনের জন্য শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। প্রতিটি মানুষের সৎ স্বভাব, সদাচরণ এবং সত্যবাদিতার মধ্যে সততা রয়েছে।

আমরা সততার মাধ্যমে বাস্তব জীবনকে সুন্দর ও কল্যাণময় করে তুলতে পারি।

সততার গুণ বর্তমান সমাজে খুব কম দেখা যায়। অথচ সততার গুণেই মানুষ বিভূষিত হন সমাজের কাছে, আল্লাহর কাছে দোজাহানে সম্মানিত হন।  

সততার মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে বলতে হয়, নবী হজরত রাসূলে করিম (সা.)-এর কর্মবহুল জীবন। মক্কায় বসবাসকালে সেই যুবক বয়সে হিলফুল ফুযুল নামক একটি সংগঠন গড়েছিলেন তিনি। এ সংগঠনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মক্কার সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ততা অর্জন করেছিলেন। এতে তিনি সততার যে পরিচয় দিয়েছেন তা আমাদের সর্বকালের জন্য অনুসরণীয়।

সে যুগে বিধর্মীদের কিছু জিনিসপত্র গচ্ছিত ছিল তার কাছে। যারা এসব জিনিস আমানত রেখেছিলেন তাদের কাছে সেগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য তিনি হিজরত করার সময় মক্কায় রেখে যান হজরত আলী (রা.) কে। উপযুক্ত সময়ে আমানতের খেয়ানত না করে নবী করিম (সা.) এসব অর্থকরী সম্পদ ফিরিয়ে দিয়ে যে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইসলামের ইতিহাসে, পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।  

নবী করিম (সা.)-এর সততার গুণে মুগ্ধ হয়ে আরবের বিপুল বিত্তশালী মহিলা হজরত খাদিজা (রা.) তার বিরাট বাণিজ্য পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। হজরত খাদিজা (রা.) হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুষ্ঠু বাণিজ্য পরিচালনা ও সততার পরিচয় পেয়ে তাকে স্বামীত্বে বরণ করে নেন।  

জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের সততা রক্ষা করে চলা উচিত। সততার মাধ্যমে মহানুভবতা ও উদার চিত্তের পরিচয় পাওয়া যায়। বোখারি শরিফে আছে, তোমাদের মধ্যে যে স্বভাব-চরিত্রে এবং সততায় উত্তম, সে আমার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয়। বর্ণিত আছে, সততার মাধ্যমেই একজন মুসলমানের প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়।  

হজরত নবী করিম (সা.) অন্য হাদিসে বর্ণনা করেছেন, তোমরা মানুষকে অর্থ দিয়ে বশ করো না বরং তাদের সৎ আচরণ, উত্তম ব্যবহার এবং সততা দিয়ে বশ করো।  

তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি ভেজালমিশ্রিত দ্রব্যের কথা প্রকাশ না করে ওই দ্রব্য বিক্রয় করবে, সে ব্যক্তি চিরকাল আল্লাহর গজবে পড়ে থাকবে। অনন্তকাল ধরে ফেরেশতারা তার ওপর অভিশাপ বর্ষণ করতে থাকবেন। ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সর্বক্ষেত্রে সততা রক্ষা করা উত্তম জীবনের পরিচয়।  

কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, সত্য পরায়ণ পুরুষ ও নারী বহু পুরস্কারে ভূষিত হবেন। বোখারি শরিফে আছে, সত্য কথা বলাই নেকির রাস্তা। সত্যভাষী মানুষই সততা প্রদর্শন করতে পারে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে সততার জীবনযাপন করার তওফিক দান করুন। আমিন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।