ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ঘূর্ণিঝড় ও বিপদাপদ থেকে বাঁচার দোয়া

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
ঘূর্ণিঝড় ও বিপদাপদ থেকে বাঁচার দোয়া ঘূর্ণিঝড় ও বিপদাপদ থেকে বাঁচার দোয়া

দোয়া হচ্ছে আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে কল্যাণ কামনা এবং আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যম। এটা একটা স্বতন্ত্র ইবাদতও বটে। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সহজ হয়।

লা ইলাহ ইল্লাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাল্লাহ বিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন, সুবহানাল্লাহ, আল হামদুলিল্লাহ- ইত্যাদি তাসবিহ, দোয়া-কালামগুলো বিপদ-আপদ মুক্তির উসিলাস্বরূপ।  

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রকার বিপদ-আপদ মানুষের কৃতকর্মের ফলাফলস্বরূপ।

 

আমরা জানি, বাতাস ব্যতীত কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না। আবার যখন এটা ভয়াবহ আকার ধারণ করে- তখন মানুষের জানমাল প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বাতাস যখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করত তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারা মোবারক বিবর্ণ হয়ে যেত। তিনি এ ভয়াবহ ঝড়ো-হাওয়ার ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন।  

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, যখন প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া শুরু হতো তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এ দোয়া পড়তেন-

দোয়া: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি; ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়াশাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এর ভালো দিকটির প্রতি, এতে যে কল্যাণ রয়েছে এবং একে যে উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে তার ভালো দিকটি প্রার্থনা করছি এবং আমি তোমার কাছে এর মন্দ দিকটি থেকে, এর মধ্যে যে অকল্যাণ রয়েছে, তা থেকে এবং এটা যে উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে তার মন্দ দিক থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।  

বলা হয়েছে, আকাশ থেকে যখন আল্লাহ পরীক্ষাস্বরূপ দুনিয়ার জমিনের ওপর বিভিন্ন আজাব-গযব প্রেরণ করেন, তখন যদি বান্দা দোয়া কালাম পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, তাহলে বিপদ-আপদ মধ্যম আকাশে স্থির হয়ে পড়বে। আল্লাহ আজাব-গযব পুনরায় আকাশে উঠিয়ে নেবেন।

ঘূর্ণিঝড় ও বিপদাপদ থেকে বাঁচার দোয়া
আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র কোরআনে নির্দেশ প্রদান করেছেন, বিপদ-আপদে নামাজ এবং ধৈর্য্যর মাধ্যমে তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করতে।  

সুতরাং বিপদের সময় বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা, নফল রোজা রাখা, সূরা ফাতেহা পাঠ করা, দুরূদ শরীফ পাঠ করা, কোরআন তেলাওয়াত করা, দোয়ায়ে ইউনূছ প্রভৃতি পাঠ করা উত্তম।  

বিপদের সময় বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করলে বিপদ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। বিপদাপদ মানবজীবনের অংশবিশেষ। তাই বিপদ দেখে ঘাবড়ানো চলবে না, সেই সঙ্গে ধৈর্য্যধারণ করতে হবে এবং নিজেকে আল্লাহর হাওলায় সোপর্দ করে দিতে হবে।  

বিপদ-মসিবত থেকে বেঁচে থাকতে এই দোয়াটি পাঠ করা যেতে পারে-

দোয়া: ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা।

অর্থ: আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমাদেরকে তারই দিকে ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! বিপদে আমাকে সওয়াব দান করুন এবং যা হারিয়েছি তার বদলে তার চেয়ে ভালো কিছু দান করুন। -সহিহ মুসলিম

অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বিপদের সময় এই দোয়াটি পাঠ করতেন-

দোয়া: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল হাকিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি- ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।

অর্থ: আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরম সহিষ্ণু ও মহাজ্ঞানী। আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি মহান আরশের প্রভু। আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি আকাশমন্ডলী, জমিন ও মহাসম্মানিত আরশের প্রভু। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।