ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

নবী করিম সা.-এর রওজা মোবারক

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, সিনিয়র বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
নবী করিম সা.-এর রওজা মোবারক মসজিদে নববী

মদিনা শরিফ থেকে: হজ ও ওমরা পালনকারীদের মদিনা আসার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো- নবী করিম (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করা, রওজায় সালাম পেশ করা।

হাদিস ও ফিকাহের গ্রন্থগুলোতে এ বিষয়ে প্রচুর নির্দেশনা রয়েছে। ইসলামি স্কলারদের মতে, মদিনায় আসা ইবাদতের অংশবিশেষ।


 
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আমার রওজা জিয়ারত করলো, তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়েগেলো। -সহিহ মুসলিম
 
নবী করিম (সা.) আরও বলেন, যে হজ করলো কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করলো না; সে আমার প্রতি জুলুম করলো। -তিরমিজি
মসজিদে নববীইসলামি স্কলারদের মতে, হাজির জন্য মদিনা শরিফ জিয়ারত করা সুন্নত। অনেকে ওয়াজিবও বলে থাকেন।
 
এ কারণে হজপালনের আগে কিংবা পরে হাজিরা মদিনা শরিফ আসেন। মদিনায় অবস্থানকালে হাজিদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হচ্ছে, মসজিদে নববিতে হাজিরা দেওয়া এবং সেখানে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। মসজিদে নববিতে এক রাকাত নামাজের সওয়াব পঞ্চাশ হাজার রাকাত নামাজের সমান। এছাড়া মসজিদে নববীতে বিরতিহীনভাবে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ  জামাতের সঙ্গে আদায়ের আলাদা ফজিলত রয়েছে।
 
 বাবুস সালাম, এই গেট দিয়ে নবীর রওজায় যেতে হয়এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হয়রত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছে আর কোনো নামাজ কাজা করেনি, সে নিফাক (মোনাফিকি) আর দোজখের আজাব থেকে নাজাত পাবে।
 
মসজিদে নববির সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূণ স্থান হলো- নবী করিম (সা.)-এর রওজা মোবারক। উম্মুল মুমিনিন হয়রত আয়েশা (রা.)-এর হুজরার মধ্যে হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর পবিত্র রওজা মোবারক অবস্থিত। রাসূলের রওজার পাশে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা.) ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.)-এর কবর। পাশে আরেকটি কবরের জায়গা খালি। এখানে হযরত ঈসা (আ.)-এর কবর হবে।
 
হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের ফজিলত প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর তার রওজা মোবারক জিয়ারতে করলো, সে যেন রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জীবদ্দশায় দশন করলো।
 
মসজিদে নববিতে প্রবেশের অনেকগুলো দরজা রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম পাশে রাসূলের রওজা জিয়ারতের জন্য যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়, ওই দরজাকে ‘বাবুস সালাম’ বলা হয়। বাবুস সালাম দিয়ে প্রবেশ করে রাসূলের রওজায় সালাম শেষে ‘বাবুল বাকি’ দিয়ে বের হতে হয়।
 
মদিনায় জিয়ারতে হাজীদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। কারণ মদিনায় এসে দুনিয়ায় জীবিত থাকতে জান্নাতে ভ্রমণের সুযোগ মেলে। কারণ নবী করিম (সা.)-এর রওজা শরিফ এবং এর থেকে পশ্চিম দিকে রাসূলে করিম (সা.)-এর মিম্বর পযন্ত স্বল্প পরিসরের স্থানটুকুকে রিয়াজুল জান্নাত বা বেহেশতের বাগিচা বলা হয়। এটি দুনিয়াতে একমাত্র জান্নাতের অংশ। এই স্থানে স্বতন্ত্র রঙয়ের কার্পেট বিছানো থাকে।
 
এই স্থানটুকু সম্পর্কে হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার রওজা ও মিম্বরের মধ্যবতী স্থানে বেহেশতের একটি বাগিচা বিদ্যমান। এখানে প্রবেশকরা মানে জান্নাতে প্রবেশ করা।
 
বস্তুত দুনিয়ার সব কবরের মধ্যে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে বেশি জিয়ারতের উপযুক্ত স্থান হলো- রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক। তাই এর উদ্দেশে সফর করা উত্তম। এ কথার ওপর পূর্বাপর সব উলামায়ে কেরামের ঐকমত্য রয়েছে।
 
হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আমলে মসজিদে নববীর আয়তন ছিলো ২৫০০ বর্গ মিটারের মতো। কিন্তু যুগের পরিক্রমায় প্রয়োজনের তাগিদে মসজিদে নববীর অনেক সংস্কার ও সম্প্রসারণ হয়েছে। এখন এর আয়তন প্রায় ২,৩৫,০০০ বর্গমিটার। একসঙ্গে প্রায় সাড়ে চার লাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে নববীতে মহিলাদের জন্য স্থান একবারেই আলাদা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
এমএইউ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।