ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ধর্মের দৃষ্টিতেও অপরাধ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ধর্মের দৃষ্টিতেও অপরাধ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ধর্মের দৃষ্টিতেও অপরাধ

বলতে গেলে সারা বছরই দেশে বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসব পরীক্ষায় এক শ্রেণির অসাধুরা নানা উপায়ে অসদুপায় অবলম্বন করে।

বলতে দ্বিধা নেই, কিছু কিছু এলাকায় এমন প্রবণতা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এমনকি পিএইচডি ডিগ্রির মতো সম্মানজনক ডিগ্রি অর্জনের ক্ষেত্রেও অসদুপায় অবলম্বনের কথা শোনা যায়।

 

যদিও পরীক্ষায় অসদুপায় বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। অনেকে তো পরীক্ষার পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে নিগ্রহের শিকার হন, এমনকি প্রাণঘাতী আক্রমণের কবলে পড়েন।  

পরীক্ষার অসদুপায় অবলম্বনের বিভিন্ন ধরন ও মাত্রা রয়েছে। কেউ নগদ অর্থের বিনিময়ে প্রক্সি পরীক্ষার্থী সেজে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়, কেউ আবার নকল করেন। বর্তমানে পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটছে। এটাও অসদুপায়।  

এভাবে নানাপন্থায় পরীক্ষায় অসদুপায়ের আশ্রয় নেওয়া ও প্রশ্রয় দেওয়া সমাজে এক সংক্রামক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে বললে বোধহয় ভুল হবে না। সৃষ্টির অন্যতম দান জ্ঞানকে নিয়ে এমন অপবিত্র তৎপরতা যেকোনো সুস্থ-বিবেকসম্পন্ন মানুষের মনে অবশ্যই আঘাত দেয়। আমরা যদি বিশেষভাবে ইসলামি অনুশাসনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, ইসলামে প্রতারণা তথা অসদুপায়ের আশ্রয় নেওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। যারা এধরনের কাজ করেন, তারা মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত নয় বলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হাদিসে উল্লেখ করেছেন।  

যারা পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে তারা আইনের চোখে অপরাধী এবং ধর্মের দৃষ্টিতে পাপী। আর যারা এমন কাজ প্রশ্রয় দেয় তারা যে মহাপাপী তা সহজেই অনুমান করা যায়।  

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা প্রথমত পরীক্ষার পবিত্রতা নষ্ট করে। দ্বিতীয়ত, সদুপায়ে পরীক্ষা দেওয়া পরীক্ষার্থীদের অধিকার নষ্ট করার অপরাধের জন্য নিজেদের হারাম কাজে জড়িয়ে ফেলে। অবৈধ পন্থার আশ্রয় নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে যে ফললাভ করে তা অবশ্যই অবৈধ হয় এবং এ অবৈধ ফলাফল নিয়ে জীবনে যা কিছু অর্জন করে তা চিরকালের জন্য অপবিত্রতায় কলুষিত হয়ে যায়। এ ধরনের লোক জীবনে যে পেশা অবলম্বন করবে, তারসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অপবিত্রতায় জড়িত করার দায়ে ইহকাল, পরকাল সর্বত্র ধিকৃত হবে।  

দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো- অনেক সময় দেখা যায়, এ ধরনের গর্হিত কাজে শিক্ষক, অভিভাবক ও বন্ধু-বান্ধবরা সহযোগিতা করে থাকেন। এটাকে অন্যায় কাজ মনে করেন না।  

অথচ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষেরা! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র (খাদ্য) আছে, তা হতে তোমরা খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ’ –সূরা বাকারা: ১৬৮

তাই পবিত্র কোরআনে বিশ্বাসী কোনো মানুষ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করতে পারে না। কারণ সততা, ন্যায়পরায়ণতা ইসলামের মৌলিক শিক্ষা।  

আমরা মনে করি, শুধু আইন প্রণয়ন ও কড়াকড়ি করে এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও এর মূলোৎপাটন সম্ভব না। এ ধরনের অসৎ তৎপরতা বন্ধের জন্য সচেতন হতে হবে সবাইকে। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের বিপথগামী করতে একাংশ কুশিক্ষিত লোক সক্রিয় থাকে। তাদের তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

তবে এটাও ঠিক, প্রশাসন কঠোর হলে অনেক বিষয় শোধরানো যায়। তাই এ বিষয়ে নজর দিতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশেষ আবেদন রইল।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।