ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

নিউজিল্যান্ডের ওয়াঙ্গেরিতে মুসলিমদের ‘ওপেন ডে’ আয়োজন

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৯
নিউজিল্যান্ডের ওয়াঙ্গেরিতে মুসলিমদের ‘ওপেন ডে’ আয়োজন ‘ওপেন ডে’তে উপস্থিত কিউই নাগরিক ও মুসলিমরা। ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ওয়াঙ্গেরিতে স্থানীয় ইসলামিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনায় ‘ওপেন ডে’ আয়োজন করা হয়। এতে অমুসলিমদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। মুসলিমদের সঙ্গে ঐক্যমত প্রকাশ করতে এবং ইসলাম সম্পর্কে ধারণা পেতে নিউজিল্যান্ডের ১০০ জনেরও বেশি নাগরিক এতে হাজির হন।

সংবাদমাধ্যম নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের প্রতিবেদনে জানা গেছে, নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর অকল্যান্ড ও অন্য শহর কাইকোহের ইসলামিক সেন্টার এবং মসজিদগুলোতে স্থানীয়রা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ইসলাম সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ নিয়ে ওয়াঙ্গেরির বাসিন্দারাও ইসলামিক সেন্টারে গিয়েছেন।

শনিবার (৩০ মার্চ) নর্থল্যান্ড মুসলিম কমিউনিটি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ওয়াঙ্গেরির মানুষদের জন্য দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ইসলাম ও জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরের আয়োজন করেছিলেন। এতে ওয়াঙ্গেরির অনেক নারী মুসলিমদের প্রতি আন্তরিকতা ও সৌহার্দ্য প্রকাশ করে হিজাব পরে হাজির হন।

কোরআন হাতে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক অ্যালেন ব্রডবেন্টে।  তার সঙ্গে কথা বলছেন স্থানীয় মুসলিম সামির সাত্তার।  ছবি: সংগৃহীত

আয়োজকদের একজন জানান, আস্থা, আন্তরিকতার ও সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারী নারীরা হিজাব পরে আসেন এবং মুসলিমদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মতবিনিময় করেন ও আলাপ-আলোচনা করেন। ইসলামী জীবনযাত্রার বিভিন্ন উপকরণ ও পবিত্র কোরআনের অনূদিত কপি তাদের উপহার দেওয়া হয়।

অন্যদিকে ‘ওপেন ডে’র পুরোটা সময় ইসলামিক সেন্টারের প্রবেশপথে পুলিশ পাহারায় ছিল।

ওয়াঙ্গেরি নিউজিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের আঞ্চলিক রাজধানী। ২০১১ সালে শহরটির জনসংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার। শহরের অধিকাংশই জনগণ খ্রিস্টান। তবে সংখ্যালঘু স্থানীয় মাওরি মুসলমান ও মুসলিম অভিবাসীদেরও এ শহরে বসবাস রয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মাওরিদের মধ্যে ইসলাম দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এক মুসলিম নারীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন দুই কিউই নাগরিক।  ছবি: সংগৃহীত

নয়নাভিরাম ও মনোরম সৌন্দর্যের দেশ নিউজিল্যান্ডে ইসলামের আগমন হয় অভিবাসীদের মাধ্যমে। ১৯৯০ এর দশকে সর্বপ্রথম চীন থেকে স্বর্ণ-অনুসন্ধান পেশায় জড়িত ১৫ জন মুসলিম নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তারা ওটাগো অঞ্চলের ডানস্টান স্বর্ণক্ষেত্রে তারা কাজ করতেন।

এরপর দ্বিতীয় দফায় ভারতের গুজরাট থেকে নিউজিল্যান্ডে তিনটি মুসলিম পরিবার আসে। তারা সেখানে বসতি স্থাপন করেন। তারপর ষাটের দশক পর্যন্ত পূর্ব ইউরোপ এবং ভারত থেকে আরও কিছু অভিবাসী মুসলিম সেখানে স্থায়ীভাবে নিবাস গড়ে তোলেন।

এক মুসলিম নারীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন এক  কিউই বৃদ্ধা।  ছবি: সংগৃহীত

সরকারী পরিসংখ্যান মতে ১৯৫০ সালে নিউজিল্যান্ডে মুসলমান অধিবাসী ছিল মাত্র দেড় শ জনের মতো। ১৯৬০ সালে এ সংখ্যা ২৬০-এ পৌঁছে। ১৯৭০ সালে ফিজি থেকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলমানরা নিউজিল্যান্ডে বসতি স্থাপন শুরু করেন। তাদের অনুসরণে নব্বইয়ের দশকের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের উদ্বাস্তু মুসলমানরা নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমায়। এভাবে নিউজিল্যান্ডে মুসলিমদের জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। ২০০৬ সালের এক পরিসংখ্যান মতে নিউজিল্যান্ডে ৩৬ হাজার মুসলিম বাড়িঘর রয়েছে।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।