ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয় পার্টি

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জাতীয় সংলাপের আহ্বান এরশাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৬
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জাতীয় সংলাপের আহ্বান এরশাদের

সংসদ ভবন থেকে: সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংলাপ করে দেশকে কঠিন অবস্থা থেকে উদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, ‘সুশাসন আজ প্রশ্নবিদ্ধ নয়, সুশাসন আজ গুলিবিদ্ধ’।



মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ একথা বলেন। এ সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ।

 

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে কঠিন উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসুন দেশকে এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য সবাই মিলে ঐক্যমত হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, যে রাজনীতিবিদরা সন্ত্রাস বিশ্বাস করে না, জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না তাদের সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করুন। আলোচনা করে কঠিন সংকট থেকে দেশকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করুন।

 

তিনি বলেন, আজ বিবেকের দায়ে অনেক কথা বলতে হচ্ছে। লোকজন কি নিরাপদে কর্মস্থলে আসতে পারে। মা কি তার সন্তানকে নিরাপদে স্কুলে পাঠাতে পারেন? হিন্দু পুরোহিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কেউ কি নিরাপদ বোধ করছে? আমরা কেউ নিরাপদে নেই। অনেকের ছেলে যখন বড় হয়, তখন সন্ধ্যার পর তার পরিবার শঙ্কিত হয়ে পড়ে ছেলে বাড়ি ফিরবে কি না। এভাবে বেশি দিন চলতে পারে না।
 
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম তনুর মা প্রশ্ন করেছেন গরিব বলে কি আমরা বিচার পাবো না? সাগর-রুনির হত্যার কি বিচার হয়েছে? তাহলে তারা কি বিচার পাবে না। একটি গুপ্ত হত্যারও কি বিচার হয়েছে? এমন নজির আপনি দেখাতে পারবেন? যে সমাজে একজন এসপি’র স্ত্রীও নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হতে পারে।

গুপ্ত হত্যার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, গত মার্চ হতে এ পর্যন্ত ১৩ জন গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছে। এ দায়িত্ব কি সরকারকে নিতে হবে না ? অন্যদিকে ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে ১ হাজার ৭'শ ১৫জন নিহত হয়েছে। এসব কি সুশাসনের ইঙ্গিত বহন করে? আমি সেদিন বলেছিলাম এসব সন্তানহারা মায়ের চোখের পানিতে আমরা ভেসে যাবো।
 
বিএনপি’র দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ক্রসফায়ার চালু করেছিলো বিএনপি। ২০০৪ সালে প্রথম ক্রসফায়ার চালু করা হয়, কেন করেছিলো? কারণ এদেশে আইনের শাসন ছিলো না, আইনের শাসন ছিলো না বলেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের বিচার এখনো হয় নাই। সেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা এখনো বহন করে চলছি।
 
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, আমাদের প্রধান বিচারপতি একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে এ দেশে বিনিয়োগ হবে না। যখন দেশের প্রধান বিচারপতি আইনের শাসন সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন তখন সাধারণ মানুষের আইন পাওয়ার উপায় থাকে না। মানুষ চোখে অন্ধকার দেখে। সরকারের সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সুশাসন উন্নয়ন ও অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। সুশাসন ছাড়া উন্নয়নের সুবাতাস জনগণ পায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৬
এসএম/জিসিপি/আরআই

**
পদোন্নতিতে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হচ্ছে না

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।