কবিতা ছাড়াও গান ও গদ্য লেখা তথা সাহিত্যের অন্যান্য শাখা প্রশাখায়ও বেশ আগ্রহী ছিলেন ‘পল্লীবন্ধু’ এরশাদ।
রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এসব কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘একুশের কবিতা’, ‘যে কবিতা সুর পেল’, ‘জীবন যখন যেমন’ ও ‘এক আকাশে সাত তারা’।
এছাড়া আছে ‘দেশ ও দশের কথা বলছি’, ‘যেখানে বর্ণমালা জ্বলে’ সহ আরও অন্যান্য বই। আছে একটি কবিতা সমগ্র ‘এরশাদের কবিতা সমগ্র’।
এরশাদের একটি জনপ্রিয় কবিতা ‘প্রেমগীতি’। যেখানে কবি এরশাদ লিখেছেন- ‘ক্লান্ত বিকেলে অবশ পায়ে/ ঘুরেছি যখন এই পথে। শান্ত নদীর নিরব কিনারে/ দেখা হয়েছিলো তোমার সাথে। ’
প্রেমের তীব্র আহ্বানের কথা ব্যক্ত করে কবি এরশাদ লেখেন -‘তোমার নয়নে নয়ন রাখিয়া/ বলেছিনু এসো প্রিয়া/ তাপিত হৃদয়ে ঝরনা ঝরাও/ প্রেমের অঞ্জলি দিয়া। ’
কবিতা যে শুধু বই এর মোড়কে লিখেছেন এরশাদ তা কিন্তু নয়। অনেক অপ্রকাশিত কবিতাও ছিল তার ভাণ্ডারে। কবিতা দিয়ে পাঠকের তো বটেই, মন গলিয়েছেন কাছের মানুষদেরও।
জানা যায়, জাতীয় পার্টির এক সভায় সহধর্মিণী রওশন এরশাদ উঠে যেতে নিলে নিজের লেখা কবিতা দিয়েই রওশনের রাগের পারদ নামিয়ে আনতেন তিনি।
স্ত্রী রওশনের হাত ধরে থামিয়ে তিনি আবৃত্তি করে উঠতেন-‘নিঃসঙ্গ ধূসর বিশাল এক অন্ধকারে/ আমি জেগে আছি/ কোথায় উষার জ্যোতি/ কতদূর আলোর মৌমাছি?’
এবং তার স্ত্রীকে বলতেন, ‘রওশন তুমি আমার আলোর মৌমাছি। ’
সর্বশেষ ২০১৮ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়ও চারটি বই এর মোড়ক উন্মোচন করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। লিখেছেন আত্মজীবনী ‘আমার কর্ম আমার জীবন’, ‘জীবন-সন্ধ্যার সন্ধ্যাতারা’ এবং বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও জীবনের নানান ঘটনার স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন ‘হোয়াট আই ডিড অ্যান্ড হোয়াট আই ওয়ান্ট টু ডু’।
সেক্ষেত্রে বলাই যায়, শুধু রাজনীতিক কিংবা এক সময়ের স্বৈরশাসক নয়। পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও অনুসারীদের মনে বেঁচে থাকবেন কবি এরশাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এসএইচএস/এমএ