ঢাকা: প্রাথমিক স্তরের সমাজ বইয়ে নীল নদ ও মিশরীয় সভ্যতার ইতিহাস তোমরা নিশ্চয়ই পড়েছ। তারপরও তোমাদের কিছু নতুন তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি নীল নদ নিয়ে।
নীল নদের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠে প্রাচীন মিশরের সভ্যতা। প্রতি বছর নীল নদের বন্যায় পলি পড়ে অতিমাত্রায় উর্বর হয়ে ওঠা উভয় কূলের মাটিতে প্রচুর ফসল হতো। এছাড়া খালের সাহায্যে পানি নিয়ে নীল নদের দুই তীরের দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতেও চাষাবাদ করা হতো।
আফ্রিকা মহাদেশের এই নীল নদ বিশ্বের দীর্ঘতম নদীরও স্বীকৃতি পেয়েছে। এর দুইটি উপনদী রয়েছে। এগুলো হচ্ছে শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ। এর মধ্যে শ্বেত নীল নদ দীর্ঘতর।
শ্বেত নীল নদ আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল হতে উৎপন্ন হয়েছে। এর সর্বদক্ষিণের উৎস হল দক্ষিণ রুয়ান্ডাতে। এটি এখান থেকে উত্তর দিকে তাঞ্জানিয়া, লেক ভিক্টোরিয়া, উগান্ডা ও দক্ষিণ সুদানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
নীলাভ নীল (ব্লু নাইল) নদ ইথিওপিয়ার তানা হ্রদ হতে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে সুদানে প্রবেশ করেছে। দুটি উপনদীই পরে সুদানের রাজধানী খার্তুমের কাছে মিলিত হয়েছে।
নীল নদের উত্তরাংশ সুদানে শুরু হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মিশর সভ্যতা প্রাচীনকাল থেকেই নীলের ওপর নির্ভরশীল।
মিশরের জনসংখ্যার অধিকাংশ এবং বেশিরভাগ শহরের অবস্থান নীল নদের উপত্যকায়। প্রাচীন মিশরের অনেক সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার অবস্থানও এখানে।
কঙ্গো, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, মিশর জুড়ে বিস্তৃত নীল নদ ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে।
পৃথিবীর সব নদ-নদী উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হলেও নীল নদ দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। এ ধরনের বৈশিষ্ট্যের আরও একটি নদ হচ্ছে সিন্ধু। এটি দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে করাচি বন্দরের পাশ দিয়ে আরব সাগরে পড়েছে।
যাহোক, বলছিলাম নীল নদ নিয়ে। এই নদীর আরও একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বছরৈর নির্দিপৃষ্থিট সময়ে পৃথিবীর অন্যান্য নদী যখন শুকিয়ে যায় তখন নীল নদ পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। আর নীদ নদ যখন শুকিয়ে যায় তখন অন্যান্য নদী পানিতে পূর্ণ থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১২
সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি / আহসান কবীর, আউটপুট এডিটর