‘পেটের দায়ে কাগজ তোকাই, মাইনসে কয় চুর, মাঝে মাঝে মাইরও দেয়, কান্দি আর আল্লার টাইন বিচার দেই, এছাড়া আর আমার কিতা করার আছে ভাই’ ?
সুনামগঞ্জ শহরের পৌর মার্কেটের টোকাই মোস্তাক’র এ প্রশ্নের এই উত্তর দেবে কে?
পৌর মার্কেটের আশপাশ থেকেই কাগজ কুড়িয়ে দিন পার করে মোস্তাক। বয়স তার ১০ কি ১৫ বছর।
২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে বড় মোস্তাক। শহরের পশ্চিমবাজারে হত দরিদ্রদের এক কলোনির ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরের বাসিন্দা তারা। কাগজ কুড়নো শেষে প্রতিদিন যে টাকা তাই সে তুলে দেয় মায়ের হাতে।
মোস্তাকের বাবা সাইদুর রহমান অনেক আগে থেকেই তাদের কোন খোঁজখবর নেয় না। বাবার প্রতি ক্ষোভের অন্ত নেই মোস্তাকের। বাবার কথা ওঠাতেই চেহারা বিবর্ণ হয়ে যায় মোস্তাকের। মোস্তাকের মা পারুল অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
লেখাপড়ার কথা জিজ্ঞেস করতেই মোস্তাক কোন উত্তর না দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে অনেকক্ষণ তাকিয়ে বললো ‘লেখাপড়া করলে খাওয়াইবো কে?’ বড় হয়ে গাড়ির ড্রাইভার হতে চায় মোস্তাক। ‘আমি ট্রাখর ড্রাইভার অইমু, তে অইলে মায় আর কাম করা লাগতো নায়’।
মোস্তকের মত সুনামগঞ্জ শহরে আরো অনেক শিশু শ্রমিক আছে যাদের দু’বেলা পেট ভরে খাবার পায় না। শিক্ষা যে তাদের অধিকার তাও তারা জানে না।
বঞ্চিত এই শিশুদের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ আর কতদূর...
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে শুভ্র, নাজাত, রাবিয়া, হেমদিপা, দিপ্ত, শুভ, সোনিয়া, সৃজন, রুনা, ফাহমিদা