ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

মিশন ফরটি সিক্স

আনুশকা মেহজাবিন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১২
মিশন ফরটি সিক্স



(হেড কোয়াটারে এমি, তামান্না, টুপুর, সাইরা, এমিলি, এশলি সবাইকে কেটরিন ম্যাডাম ডেকেছেন)

কেটরিন ম্যাডাম: তাহলে তোমরা এসেছ মেয়েরা।

টুপুর (হাপাতে হাপাতে): ম্যাডাম আপনি ডেকেছেন বলে দৌঁড়ে চলে এলাম।



তামান্না: হ্যাঁ ম্যাডাম! খাবার, গোসল, পড়া সব ফেলে আমারা চলে এসেছি। তা ম্যাডাম হয়েছে কি?

কেটরিন: তোমরা খবর পাওনি কয়েকজন মিলে কুইন এলিযাবেথ কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে?

টুপুর: কি!

তামান্না: কি!

(সবাই কি...বলে চিৎকার করে উঠল)

কেটরিন: তোমরা রাণীর নিরাপত্তা দেবে। পারবে?

সবাই এক সঙ্গে বলে উঠল: ইয়েস!



(এরপর লন্ডনে, কুইন এলিযাবেথের দরবারে। সবাই এখানে ইংরেজিতে কথা বলবে যা আমরা বাংলায় অনুবাদ করবো)

কুইন এলিযাবেথ: তো তোমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছ, তাই তো?

টুপুর: হ্যাঁ রাণী মা, আপনি ঠিক ধরেছেন।

কুইন: কেন এসেছ আমার এই ধংসস্তুপে।

তামান্না: কি যে বলেন রাণী মা, ইংল্যান্ড ধংসস্তুপ হতে যাবে কেন?

কুইন: কেন আর জিজ্ঞেস করি, দেখছো না বিল্ডিং, ইউনিভার্সিটি, অফিস, স্কুল, বানিয়ে শহরটাকে গুদাম ঘর করেছে।

তামান্ন: তা থাক রানী মা বরং আমরা মূল কথায় আসি। টিম টোয়েন্টি ফোর থেকে আমাদেরকে আপনার নিরাপত্তার জন্য পাঠিয়েছে।

কুইন:  কেন, আমাকে গার্ড করতে হবে কেন?

এমি: আসলে, আমরা খবর পেয়েছি কিছু বিপথগামী আপনাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।

কুইন: কি! আমাকে মারার প্ল্যান! গার্ডস গার্ডস তাড়াতাড়ি ক্যাসালের চারপাশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জারি কর। এদের এখানেই থাকার ব্যবস্থা কর। আর তোমরা যতদিন চাও এখানে থাকতে পার। তবে আমাকে রক্ষা করো আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না।

সাইরা: রাণী মা আপনাকে বাঁচানোর জন্য আমরা জীবন দিয়ে দিতে পারবো ।

কুইন: না, না। তা করার দরকার নেই। নিজেরা বেঁচে থাকলে তোমরাই তো বাঁচাবে। পৃথিবীর ভবিষ্যৎ তোমরা। তোমরা না থাকলে তো পৃথিবী শেষ। আর তখন ইংল্যান্ডের বোঝা আরও বেড়ে গিয়ে আমাকে এমনিতেই মেরে ফেলবে।

(সবাই হাসতে লাগলো)



(পরদিন সকালে রাজকীয় কামরায়)

এমিলি: এই না হলে জীবন! একেই বলে রাজার হালে জীবন–যাপন।

এশলি: একদম ঠিক। এমিলি তুমি সবসময় রাইট, ঠিক না।

এমিলি: ইস! যদি সারা জীবন এখানে কাটাতে পারতাম।

টুপুর: আমরা আর মাত্র ৫-৬ দিন পরই বাড়ি ফিরবো। ওখানে আরও কাজ আছে। যদি বেশি সময় লাগে তাহলে থাকা যাবে না। আশাকরি আমাদের বেশি সময় লাগবে না।

তখনই..

রাজ কর্মচারী: রাণী মা আপনাদের ডেকেছেন।

তামান্না: তুমি যাও আমরা আসছি।

রাজ কর্মচারী: জী।

(পরে রাণী মার সামনে)

কুইন:  কেমন আছো মেয়েরা? রাতের ঘুম কেমন হল?

এমি: খুব ভাল হয়েছে রাণী মা।

এমন সময়...

রাজরক্ষী: রাণী মা আপনার জন্যে বিলেত থেকে চিঠি এসেছে।

কুইন: দাওতো দেখি।

৫ মিনিট পর

কুইন: এসব কি! গার্ড, উইলিয়াম কোথায়? খোঁজ।

১ ঘণ্টা পর

গার্ড: না রাণী মা। পুরো ক্যাসালের কোথাও নেই প্রিন্স উইলিয়াম।

কুইন: নাহ! সব শেষ। শেষ পর্যন্ত নাতিটাকে হারালাম। উহ!

টুপুর: কি হয়েছে রাণী মা? চিঠিটা একটু দিন তো।

কুইন: এই নাও।

১০ মিনিট পর

টুপুরঃ হুমম।

চিঠিতে যা লেখা

মহারানী মা,
আমার সালাম গ্রহণ করুন। আমাদের কথা মতো কাজ না করলে আপনার নাতিকে ফিরে পাবেন না।

ইতি
এক্স

টুপুর: বুঝেছি রাণী মা। চারপাশে যেহেতু গার্ড রয়েছে তাই প্রিন্স উইলিয়ামের সাথে কাণ্ডটা ঘটালো। তবে এজন্যে বোঝা গেল কাজটা করা হচ্ছে টাকার জন্য। সঙ্গে এটাও বোঝা হয়ে গেলো টাকা না দিলে পরের ভিকটিম আমাদের মিডেলটান। তাকে ডাকো।

কুইন: এখন আমার নাতির কি হবে?

এমিঃ আমরা শিগগিরই বের করবো রাণী মা। আগে মিডেলটানকে ডাকেন।

মিডেলটান আসার সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত হয়ে প্রিন্স উইলিয়াম প্রাসাদে ঢুকে লুটিয়ে পড়লো............

টুপুর: এ কি!



মিডেলটান দৌঁড়ে গিয়ে উইলিয়ামকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে গেল। অবস্থা গুরুতর ছিল না বলে বিকেলের মধ্যে ছাড়া পেল।

বাড়ি ফিরে সে সব কথা বলল...

উইলিয়াম: প্রথমে কিছু লোকজন এসে বলল, নানি ডাকছে। এরপর কাপড় বদলে আমি রুম থেকে বের হতেই একজন আমার মুখে কি একটা যেন চেপে ধরলে আমি বেহুঁশ হয়ে গেলাম। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে একটা বন্ধ কামরায় আবিষ্কার করলাম। চোখ মেলে দেখলাম একটা টেবিল। টেবিলের পাশে কিছু চেয়ার। চেয়ারে বসা কয়েকজন লোক। টেবিলের ওপর একটা ল্যাম্প রুমের একমাত্র আলোর উৎস। ল্যাম্পের আলোয় লোকগুলোর মুখ দেখা না গেলেও কথা শোনা যাচ্ছিল স্পষ্ট। কথা শুনে মনে হল তারা নানিকে হত্যা করার প্ল্যান করছে। নানিকে হত্যার কথা বলতেই আমি চিৎকার করে উঠলাম।

একজন সামনে এসে আমাকে এমন একটা থাপ্পড় দিল যে সেখানেই জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে। এরপর আর কিছু মনে নাই।

টুপুর: ঠিক আছে। আচ্ছা আপনার কি একটুও মনে নেই যে জায়গাটা কোথায় বা কোন চিহ্ন যার সাহায্যে আমরা তার কাছে পৌঁছাতে পারি?

উইলিয়াম: নাহ, আমি তেমন কিছু মনে করতে পারছি না। তবে জায়গাটায় অনেক ভোদকা গন্ধ ছিল। যেন মরা মাছের গন্ধ।

এমি: নিশ্চয়।

টুপুর: এবার আমরা পেয়েছি। আমরা জানি যে এখন ইংল্যান্ডে উৎসব। সব মাছ সরবরাহ কোম্পানিগুলো বন্ধ, শুধু লন্ডন ফিশারি খোলা। কালকেই আমরা বের করে ফেলব তাদের।

তামান্না: তবে খুব সাবধানে। তারা খুব বিপদজনক।

এমি: আজ একটু তৃপ্তি করে ঘুমোতে চাই। হয়তো আজই আমাদের শেষ রাত।

সবাই হেসে উঠল



পরদিন সকালে লন্ডন ফিশারিতে...

খুব গোলাগুলি হচ্ছে।

শত্রু পক্ষ টিম টোয়েন্টি ফোর কে ঘিরে ধরেছে।

এমন সময় টুপুর স্পট থেকে পালিয়ে গেল।

সবাই ভয়ে শেষ।

যেই শত্রুপক্ষ গুলি করবে অমনি ঘাস থেকে উঠে এল টুপুর।

গুলি চালিয়ে নিমিশে শেষ করে ফেলল শত্রু পক্ষকে।

টিম টোয়েন্টি ফোরের জয়।

এমন সময়...

কে যেন গুলি চালাল। যা এসে লাগল ঠিক সাইরার বুকে। ছেদ করে ফেলল তার বুক। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করল। পরে জানা গেল খুনি এক বাঁদর!



আজ বিজয়ের দিনের উপলক্ষে টিম টোয়েন্টি ফোর খুশি হওয়ার বদলে কাঁদছে! বন্ধুকে হারানোর দুঃখ তারা ছাড়া আর কেউ বোঝে না। আজ তারা দেশে ফিরে যাচ্ছে। গিয়ে সাইরার মাকে কি বলবে তা নিয়েই তারা ভেবে পাচ্ছে না।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।