বন্ধুরা, চলো ঘুরে আসি কল্পনার রাজ্য থেকে। পড়ো আর একটু করে চোখ বন্ধ করো।
ভাবছো শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কি কল্পনায়ও দেখা যায়! এবার চোখ খোলো পুরোপুরি। ছবিগুলো দেখো ভালো করে। দেখবে যে কথাগুলো উপরে বললাম বা তুমি কল্পনা করলে তার সবই সত্যি!
অদ্ভুত অবিশ্বাস্য মনে হলেও একথা সত্যি যে, পৃথিবীতে এমন এক প্রজাতির ব্যাঙ আছে। সাধারণ দক্ষিণ আফ্রিকার হিউমিড রেইনফরেস্টে বর্ষাকালে ট্রান্সপারেন্ট ফ্রগ, গ্লাস ফ্রগ বা কাচব্যাঙ নামে পরিচিত এই ব্যাঙগুলো দেখা যায়। রেইনফরেস্ট হলো উঁচু উঁচু গাছ, আর উষ্ণ আবহাওয়ার বন। আর এই বনে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টি হয়। তাই পৃথিবীর উদ্ভিদ-প্রাণীর অধিকাংশই এ বনে দেখা যায়।
এদের প্রজাতি আছে ৬৫টি। রংও বিভিন্ন রকম। তবে উপরের চামড়া স্বচ্ছ। ফলে শরীরের ভেতরের সবই দেখা যায়। শুধু তাই নয়, শরীরের শিরা উপশিরা, রক্ত চলাচল, হাড় সবই দেখা যায় কাচব্যাঙের। অনেকে আবার আফ্রিকার জঙ্গলের ভূত বলেন একে।
এদের অধিকাংশ প্রজাতি ছোট আকৃতির হয়। গড় দৈর্ঘ্য ১.৮ থেকে ৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। তাই বনের মধ্যে এদের খুঁজে পাওয়াও কিন্তু সহজ নয়। সহজেই এরা পাতার মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে।
নিজেদের আবাসস্থল খুঁজতে এবং দখল করতে কাচব্যাঙ অতিব্যস্ত থাকে। বিশেষ করে পুরুষ ব্যাঙ। নিজের সঙ্গী খুঁজে লড়াই করে তাদের বসবাস এলাকা ঠিক করে এরা।
প্রজননের সময় পাতার উপর দুই পুরুষ ব্যাঙ লড়াই করে। লড়াইয়ে যে জিতে যায় সে টিকে থাকে। অন্যটি স্থান ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর পুরুষ ব্যাঙটি রেসলিংয়ের মতো অদ্ভুত একধরনের শব্দ করে নারী ব্যাঙকে আকৃষ্ট করে।
আফ্রিকার জঙ্গলে চলতে ফিরতে কপাল ভালো থাকলে চোখে পড়ে কাচব্যাঙ। তবে বনের গম্ভীর আবহাওয়ায় হঠাৎ এমন অদ্ভুত ব্যাঙ দেখে কেউ কেউ ভূত ভেবে আঁতকে ওঠেন। তাই এদের রেইনফরেস্টের ভূতও বলা হয়!
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৩
এএ/আরকে