গহীন বন। সেই বনে বসবাস করে হাজার হাজার বানর ।
এক কথায় সেই বনে বানরের রাজত্ব চলে। সেই বনের রাজা বসে বসে কি যেন ভাবছে। মন্ত্রী মশাই রাজার এই অবস্থা দেখে জিজ্ঞাস করলেন, ‘কি হয়েছে আপনার? কি নিয়ে এত চিন্তা করছেন?’
রাজা বললেন, ‘মন্ত্রী মশাই আমার আজকাল কিছু ভালো লাগে না। সময় কাটতে চায় না, সবকিছু একঘেয়েমি লাগে। কোন কিছুতে নতুনত্ব নেই, খেলাধুলা, বিনোদন সব কিছুই আগের মত। এবার নতুন কিছু করুন, তা না হলে পাগল হয়ে যাবো। ’
মন্ত্রী কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, ‘একটা কাজ করা যায়। কিন্তু তা ঠিক হবে কিনা। ’
রাজা উত্তেজিত হয়ে বললো, ‘তাড়াতাড়ি বলুন কি কাজ?’
মন্ত্রী বললো, ‘আমাদের রাজ্যে বাইরে মানুষদের বসবাস। তাদের কাছ থেকে কিছু শিখে আসলে কেমন হয়!’
রাজা বললো, ‘আপনি তাহলে তাই করুন। সম্পূর্ণ দায়িত্ব আপনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো। ’
মন্ত্রী মশাই রাজ্যের সেনাপতিকে দায়িত্ব দিল অন্য মানুষের রাজ্য থেকে কিছু শিখে আসতে। সেনাপতি ওই রাজ্যে রওনা দিল। জঙ্গলের পাশেই ছোট একটা মাঠ। সেখানে ছোট ছেলেদের জটলা। সেনাপতি গাছে বসে সব দেখছে। হঠাৎ একটা ছেলে লম্বা একটা লাঠি বের করলো। সবাই তাকে ঘিরে ধরলো। আর একটা ছেলে দৌঁড়ে এসে গোল কি যেন ছুড়ে দিল। লাঠি ধরা ছেলেটা গোল জিনিসটায় সজোড়ে বাড়ি মারলো। আর অন্য ছেলেরা সেটা কুরিয়ে আনলো। তারপর আবার ছুরে মারলো, বারি মারলো, কুরিয়ে আনলো এভাবে চলতে লাগলো। হঠাৎ গোল জিনিসটা জঙ্গলে ঢুকে পরলো। এই সুযোগে সেনাপতি গোল জিনিসটা নিয়ে কেটে পরলো। তারপর সোজা মন্ত্রীর কাছে চলে আসলো। তারপর মন্ত্রীকে সব খুলে বললো। মন্ত্রী তাৎক্ষনিক সেনাপতিকে রাজার কাছে নিয়ে গেলেন। রাজা গোল জিনিসটা হাতে নিয়ে বললেন, ‘এটা কি? এটা দিয়ে কি করবো?’ সেনাপতি যা যা দেখেছে তা রাজাকে খুলে বললেন। শুনে রাজা খুব খুশি। তিনি মন্ত্রীকে এই খেলার ব্যবস্থা করতে বললেন। আর সেনাপতিকে পুরস্কৃত করলেন। মন্ত্রী সব ব্যবস্থা করে রাজাকে খবর দিলেন। রাজ্যের সব বানর এই খেলা দেখার জন্য ভীড় করতে লাগলো।
রাজা লাঠি নিয়ে দাঁড়ালো আর সেনাপতি গোল জিনিসটা ছুড়ে মারলো। কিন্তু রাজা লাগাতে পারলো না, দ্বিতীয়বারও পারলো না। তৃতীয়বার সজোরে আঘাত করলো। সবাই হুল্লোর দিয়ে উঠলো। আস্তে আস্তে বানর রাজ্যে এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগলো। রাজার মনে কোন দুঃখ থাকলো না। এতে প্রজারাও খুশি। এভাবেই বানর রাজ্যে ক্রিকেট খেলার প্রচলন শুরু হলো। তারা এই খেলার নাম দিল ‘ডাংগুটি’।