আচ্ছা বন্ধুরা বলতো বাবা দিবস কবে পালিত হয়? হ্যাঁ ঠিকই বলেছো। প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় বাবা দিবস।
তোমরা কি লিখবে জানি না। তবে আমি কি ছড়া লিখব সেটি তোমাদের বলি। ‘বাবা আমার বন্ধু ছিল/ছিল খেলার সাথী/ছায়া হয়ে থাকতো পাশে/নিয়ে সুখের ছাতি/রোদ বৃষ্টি ঝড়ঝাপটা/এসব মাথায় নিয়ে/ছুটতো বাবা মাঠের দিকে/লাঙল কাঁধে দিয়ে/পাখি ডাকা ভোর বেলাতে/সালাত আদায় করে/জমি চষে গরু নিয়ে/ফিরতো বাবা ঘরে/এখন বাবার অনেক বয়স/মনটা শিশুর মতো/বাবার প্রতি আমার মাথা/শ্রদ্ধাতে হয় নত। ’
একদিন আমার বাবা কি করলেন জানো? সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার সময় রঙিন একটি ঘুড়ি কিনে আনলেন। সেই ঘুড়িটি নিয়ে আমি একটি ছড়া লিখেছিলাম। সেটি হলো ‘আমার একটা ঘুড়ি ছিল/লাল সবুজে মাখা/মনের সুখে উড়িয়ে দিতাম/লেজটা আঁকা-বাঁকা/বই খাতাসব শিকায় তুলে/লাটাই সুতা হাতে/ছুটে যেতাম তেপান্তরে/বন্ধু কজন সাথে/নীল আকাশে মেঘের ভেলায়/মুক্ত চিলের মতো/ডানা মেলে উড়তো ঘুড়ি/আনন্দ যে কতো। ’
আকাশে ঘুড়ি ওড়াতে যেমন মজা ঠিক তেমনি মজা খাল বিল কিংবা পুকুর থেকে শাপলা শালুক তোলা। গ্রামাঞ্চলে এমন দৃশ্য দেখলে মনটা সত্যিই জুড়িয়ে যায়। ‘দিঘির বুকে শাপলা শালুক/হাসে খুকুর সাথে/চাঁদের বুড়ি আঁকছে ছবি/জোছনা মাখা রাতে/গাঁয়ের মাটি মাঠের ফসল/জড়িয়ে থাকে প্রাণে/মায়ের আঁচল বটের ছায়া/শান্তি বুকে আনে। ’
কিন্তু কোথায় সেই গ্রাম? যে গ্রামে গেলে এমন মধুর সব দৃশ্য দেখা যায়? যায় না। অনেক গ্রামের এখন আর শাপলা শালুক দেখা যায় না। খোলা সবুজ মাঠ দেখা যায় না। দেখা যায় না রাতের বেলা হারিকেন অথবা হ্যাচাং লাইট জ্বালিয়ে পালাগান কিংবা যাত্রার দৃশ্য। এই কথাগুলো যদি ছড়ায় ছড়ায় বলা যায় তাহলে কেমন হবে? এই যেমন- ‘কোথায় আমার সবুজ গ্রাম/কোথায় ডাঙ্গর নদী/পাই না খুঁজে পালের নাও/যা দেখতাম নিরবধি/কোথায় আমার সবুজ গ্রাম/কোথায় পালা গান/কোথায় গেল ঢেঁকি ছাঁটাই/আউশ চালের ঘ্রাণ। ’
বন্ধুরা, এই মুহূর্তে আউশ ধানের ঘ্রাণ না পেলেও আমি নতুন একটি বইয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছি। বইটির নাম ‘শখের ঘুড়ি’। তোমাদের জন্য ছড়ার এই বইটি লিখেছেন ছোটো বড়ো সবার প্রিয় ছড়াকার বন্ধু শাহজাহান মোহাম্মদ। তোমরা এতক্ষণ ছড়ার যে অংশবিশেষগুলো পড়লে সেগুলো তার লেখা ওই বইতে আছে।
মোট ১৬টি ছড়া দিয়ে সাজানো এই বইটির ৪ রঙা প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন আঁকিয়ে বন্ধু বিমানেশ চন্দ্র বিশ্বাস। বইটি প্রকাশ করেছে ঢাকার খিলগাঁও চৌধুরীপাড়াস্থ ‘লোকালপ্রেস’ প্রকাশনী। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪-এ প্রকাশিত ক্রাউন সাইজের ২৪ পৃষ্ঠার এ বইটির মূল্য ১০০ (একশত) টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৪