রসুলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র খোকন ও মদন। তাদের বাবা ফটিক চাঁন মোল্লা গ্রামের একজন ধনী লোক।
একদিন সব অভিযোগ এক করে বিচার করতে বসলেন তাদের বাবা-মা। বিচারে বসে ফটিক চাঁন মোল্লা যখন দুই ছেলের নাম উচ্চারণ করলেন, অমনি মা ফুল বানু বাধ সাধলেন। বাবাকে বুঝিয়ে বললেন, ছেলেরা একটু দুষ্টুমি তো করবেই। এজন্য বিচার করার কি দরকার? মায়ের বাধার কারণে ওই দিন বেঁচে যায় খোকন ও মদন।
এবার তাদের কপালে আরেক অভিযোগ! অভিযোগ হল তারা পড়ালেখা করে না, স্কুলে গিয়ে দুষ্টুমি করে, স্যারদের মান্য করে না। খোকন-মদন এক আকষ্মিক ঘোষণা দিয়ে বসে যে, পড়ালেখাসহ যাবতীয় কোন কিছু তারা করবে না এবং শিখবে না।
দুই ভাইয়ের আকষ্মিক ঘোষণায় দারুন হতাশায় পড়েন ফটিক চাঁন মোল্লা। এমন সময় তাদের স্কুলে আসে নতুন এক স্যার। স্যারের নাম মিথুন বাবু। সবাই তাকে মিথুন স্যার বলেই ডাকে। স্যার ছিলেন খুবই কড়া। এই স্যারই খোকন ও মদনকে পড়শোনা করাতে পারবেন এই বিশ্বাষ নিয়ে ফটিক চাঁন মোল্লা মিথুন স্যারকে খোঁজা শুরু করেন। মিথুন স্যার সবকিছু শোনে তাদের বাবার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলেন।
প্রথম দিন মিথুন স্যার এলেন। স্যার এসে খোকন, মদনকে বললেন, আজ ১ম দিন। তাই পড়াশুনার দরকার নেই। চলো আম পারতে যাই। অনেক খুশি হয়ে খোকন-মদন স্যারের সঙ্গে আম পারতে গেল। খোকনকে নিচে রেখে মদনকে গাছে ওঠালেন মিথুন স্যার। এবার মদনকে স্যার বললেন, ১টা আম নিচে ফেল? মদন ১টা আম নিচে ফেলে। স্যার খোকনকে বলল, কয়টা আম এখানে? খোকন বলল, ১টা। আবার স্যার মদনকে বলেন, আরেকটা আম নিচে ফেল? মদন তাই করল। খোকনকে স্যার বলল, এবার কয়টা আম হয়েছে? খোকন বলে, ২টা। স্যার মদনকে আবার বললেন, এবার ২টা আম নিচে ফেল? মদনও তাই করে। স্যার খোকনকে বললেন, আম এবার কয়টা হয়েছে? খোকন বলে, ৪টা।
খোকন হঠাৎ জোরে বলে উঠল, মদন তুই গাছ থেকে নেমে আয়। স্যার আমাদের আম পাড়াচ্ছেন না! স্যার আমাদের অঙ্ক শেখাচ্ছেন।