ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

লক্ষ্মী শিশুদের বন্ধু সান্টা

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
লক্ষ্মী শিশুদের বন্ধু সান্টা

বড়দিন মানেই এত্ত এত্ত সুন্দর সুন্দর উপহার। সব উপহারের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপহার কোনটা বলো তো?

অবশ্যই সান্টা ক্লজের দেওয়া উপহার।

কারণ সান্টা ক্লজ সবাইকে পছন্দমতো সুন্দর উপহার দিয়ে যান।

আচ্ছা বলো তো, এই যে ক্রিসমাসের আগে উপহার দিয়ে যাওয়া সান্টা ক্লজ, এই সান্টা আসলে কে?

সান্টা কে তা জিজ্ঞেস করলেই নিশ্চয়ই বলবে, সান্টা লাল-সাদা পোশাক পরা বৃদ্ধ এক ব্যক্তি, যার কাঁধে থাকে উপহারের ঝোলা। তিনি বিশ্বের সব লক্ষ্মী শিশুদের বড়দিনের উপহার দিয়ে যান।

হ্যাঁ, সান্টা ক্লজ তেমনই একজন ব্যক্তি। তবে তার পরিচয়টা আরো দীর্ঘ। মূলত আজকের সান্টা ক্লজের চরিত্রটি এসেছে ঐতিহাসিক উপহার বিতরণকারী কিংবদন্তি চরিত্র সেইন্ট নিকোলাসের জীবন থেকে। তবে সেই কিংবদন্তি কিন্তু আজকের সান্টার মতো লাল-সাদা আলখেল্লা পরা কালো চামড়ার বেল্ট ও বুট জুতো পরা ব্যক্তি ছিলেন না।

লোকমুখে ও বিভিন্ন উপকথা থেকে জানা যায় সেইন্ট নিকোলাসের আসল চিত্রটি ছিল বিশপের আলখেল্লা পরা সন্তের চিত্র। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্যারিক্যাচারিস্ট ও রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট টমাস নাস্টের আঁকা একটি চিত্রের প্রভাবে সান্টা ক্লজ আজকের রূপ ধারণ করে।    

সবাই কিন্তু সান্টা ক্লজকে একই নামে ডাকে না। শিশুদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম ‘সান্টা। ’ আমেরিকার দেশগুলোতে বলা হয় সান্টা ক্লজ। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের মানুষেরা কিন্তু এই চরিত্রটিকে ফাদার ক্রিসমাস বলে। এছাড়াও সান্টা ক্লজকে সেইন্ট নিকোলাস বা ক্রিস ক্রিঙ্গল বলা হয়।

সান্টা ক্লজ শিশুদের প্রিয় চরিত্র। শিশুদের কাছে তিনি কাল্পনিক ব্যক্তি নন, বরং সত্যিকারের একটা মানুষ, যিনি বড়দিনে তাদের পছন্দমতো উপহার দিয়ে যান। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, সান্টা ক্লজ সব শিশুদের দুই ভাগে ভাগ করেন- লক্ষ্মী ও দুষ্টু। ক্রিসমাসের আগের রাত বা ক্রিসমাস ইভ অথবা ৬ ডিসেম্বর ফিস্ট ডে-তে তিনি লক্ষ্মী শিশুদের জন্য বড়দিনের উপহার রেখে যান। আর দুষ্টু শিশুদের জন্য উপহারের বদলে রেখে যান কয়লা।

এই যে বিশ্বের সব লক্ষ্মী শিশুদের জন্য এত এত উপহার, এই উপহারগুলো স্যান্টা কোথা থেকে পান বলো তো?

তার একটা উপহারের কারখানা আছে। সেখানে অনেক বামন কাজ করে। তারাই রাতদিন খেটে শিশুদের মনের মতো উপহার তৈরি করে। তারপর সান্টা তার হরিণে টানা স্লেজে চড়ে সব শিশুদের বাড়িতে উপহার দিতে যান। এই হরিণগুলো আবার যেনতেন হরিণ না কিন্তু, তারা উড়তে পারে। সান্টা তার স্লেজ নিয়ে উড়ে পুরো বিশ্ব ঘুরে ঘুরে সব শিশুদের উপহার বিতরণ করেন।

সান্টা ক্লজের বসবাস উত্তর মেরুতে। সেখানে তার নির্দিষ্ট একটা ঠিকানা আছে, যে ঠিকানায় শিশুরা তাকে চিঠি পাঠায়। সেই চিঠিতে থাকে উপহারের তালিকা। শুধু তাই নয়, চিঠিতে অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথাও থাকে। সান্টার বামন আর হরিণগুলোর খোঁজ জানতে চায় অনেকে, কেউ জানতে চায় মিসেস ক্লজের কথা।

সান্টা যেন উপহার রেখে যেতে পারে, সেজন্য অনেকে জানালায়, বিছানার পাশে বা ফায়ারপ্লেসের সামনে ঝুলিয়ে রাখে মোজা, যেন সেখানে সান্টা উপহার রেখে যেতে পারেন। শুধু তাই নয়, সান্টার হরিণগুলোর জন্য মোজার ভেতরে গাজর রেখে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আবার সান্টার জন্য রেখে দেয় দুধ, পাউরুটি, বাদামসহ নানারকম খাবার।

পশ্চিমা দেশগুলোতে বড়দিনের কিছুদিন আগে থেকেই সান্টা ক্লজ সাজা মানুষদের দেখা যায় রাস্তাঘাটে, রেস্টুরেন্ট বা হোটেলগুলোতে। এখন বাংলাদেশেও সান্টা ক্লজ দেখা যায়। সান্টারূপী এই ব্যক্তিরা শিশুদের মাঝে চকলেট বিতরণ করেন।

সান্টা ক্লজকে দেখতে ইচ্ছে করছে খুব? সামনেই বড়দিন। ভাগ্য ভালো থাকলে কোনো বিনোদন পার্ক বা রেস্তোঁরায় তুমিও দেখা পেয়ে যেতে পারো হাসিখুশি বৃদ্ধ মানুষটির।  

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।