রাজা ইউ তখন মতায়। মানুষ ও পশুপাখির জগতের শাসক ছিলেন তিনি।
বক্তৃতাকালে একবার পিঁপড়া-সৈন্যদের প্রতিনিধি বললো মজার এক কথা। তার মতে পৃথিবীতে পিঁপড়ারাই জগতের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। এতই শক্তিশালী যে, হাতিরাও তাদের সঙ্গে পেরে ওঠবে না। আর পিঁপড়া বক্তা ছিল খুবই অহংকারী। সে মনে করতো গোবরে পোকারা কোনো প্রাণীই নয়। এমন ভাব দেখাতো যে, মনে হতো এমন প্রাণী তার সামনে না এলেই যেন সে খুশি থাকে।
এমন ভাব দেখার পর গোবরে পোকার রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তারপরও সে ভাবলো অহেতুক মারামারি করার দরকার নেই। রাজাকেই বিষয়টা জানানো হোক। রাজা শুনে বলল- এটা তোমাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তোমরাই শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হও। লড়াইয়ে নেমে যাও। দেখা যাক কে জিতে মানে কে বেশি শক্তিশালী বলে প্রমানিত হয়।
রাজা জানিয়ে দিলো, তিনদিন পরই হবে সেই লড়াই। সেই অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে ঢোল পিটিয়ে দেওয়া হলো- পিঁপড়া ও গোবরে পোকার লড়াই হবে। সবাই আমন্ত্রিত।
নির্দিষ্ট দিনের সকালবেলা পিঁপড়ারা লাইন ধরে এগিয়ে যেতে থাকে লড়াইয়ের ময়দানের দিকে। এক ইঞ্চি প্রসস্ত সেই লাইন। দৈর্ঘ্যে অনেক বড়। হাজার হাজার পিঁপড়া। লাখও ছাড়িয়ে যেতে পারে। দেখে মনে হতে পারে- লাল হলুদের বিশাল বাহিনী যেন এগিয়ে যাচ্ছে।
লড়াইয়ের ময়দানে পৌঁছার পর এলো গোবরে পোকারা। তারাও সংখ্যায় খুব একটা কম না। শুরু হলো লড়াই। পিঁপড়ার ধারালো ঠোঁটের আঘাতে জর্জরিত হতে থাকে গোবরে পোকারা। কামড় যাকে বলে। এমন কামড় ওরা জীবনে খায়নি আর কখনো। তাদের দেহগুলো টুকরো টুকরো হতে থাকে পিঁপড়ার কামড়ে। এমন অবস্থায় তারা তাড়াতাড়ি নিজেদেরকে মাটির নিচে লুকিয়ে নিতে থাকে।
তারপর রাজা সিদ্ধান্ত নিলেন পিঁপড়াদেরই জয় হয়েছে। অতএব এখন থেকে গোবরে পোকাদের জন্য মাটির নিচেই থাকার জায়গা হোক। ওখানে থাকাই ওদের জন্য নিরাপদ। শুধু বৃষ্টি হলেই ওরা বাইরে আসবে। সেই নিয়ম এখনো চালু আছে।