একটা কুকুর আর একটা কুকুরি কোন ফাঁকে কেমন করে যেন পালিয়ে গেল। তারা গ্রাম ছেড়ে এক বনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
অনেক ক্ষুধা এদের পেটে। আর শরীরেও নেই তেমন শক্তি।
কুকুরটা বলে, পায়ের জোরে কোনোমতে জীবন বাঁচালাম, এখন ক্ষুধা থেকে বাঁচি কীভাবে।
কুকুরি বলে, মানুষ আমাদের ওপর খুব রেগে আছে। এখন কোনো গ্রামে আশ্রয় নেওয়া ঠিক হবে না- চলো আমরা পাশের ওই বনে চলে যাই।
তারা বনের পাশে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে, বনের ভেতরে নানা জাতের ছোট ছোট পশু-পাখি আছে। তারা যার যার মতো করে চলছে। কুকুর আর কুকুরি আরেকটু এগিয়ে গেল। সামনে এগুতেই দেখে কয়েকটা শেয়াল বসে কি যেন বলাবলি করছে।
এক শেয়াল কান খাঁড়া করে বললো, কে? কে তোমরা এখানে এসে ইতিউতি করছ?
কুকুরি খুব নরম সুরে বললো, ভাই শেয়াল তোমরা আমাদের চিনতে না পারলেও আমরা ঠিকই তোমাদের চিনতে পারছি।
আরেকটা বয়স্ক শেয়াল কাছে এসে বললো, তোমাদের নাম-পরিচয় বলো, শুনি।
আমাদের নাম কুকু, বললো কুকুরটা।
কুকুরি বলল, কুকু আমাদের আসল নাম না, মানুষ আমাদের আদর করে কুকু বলে ডাকে। আমাদের আসল নাম হলো, কুকুর।
শেয়াল কান খাঁড়া করে বললো, মানুষ তোমাদের আদর করে? আবার আদর করে কুকু বলেও ডাকে? ভারি মজার কথা তো? আমরা তো মানুষের ভয়ে বন থেকে বের হতে পারি না। তো তোমরা এখানে কী চাও?
কুকুরি বলল, আমরা তোমাদের সঙ্গে থাকতে চাই। কারণ গ্রামের মানুষকে শান্তি দেওয়ার কাজ শেষ-এখন বনে শান্তি বিতরণ করতে এসেছি আমরা।
শান্তি? শেয়ালেরা চোখ গোল করে বলে, আমরা তো শান্তিতেই আছি। এখানে কোন অশান্তি নেই। যাও, আমাদের এ শান্তির বনে তোমাদের কোনো দরকার নেই। যেখানে শান্তি নেই সেখানে গিয়ে শান্তি বিতরণ করো গে।
কুকুরি বললো, আরে ভাই তোমরা যেভাবে আছ, তাকেই বলছো শান্তিতে আছি। সুখ-শান্তির কি শেষ আছে। আমরা বনে সবার মাঝে এমন সুখ আর শান্তি বিলিয়ে দেবো যে তোমরা আফসোস করে বলবে, হায়রে, আগে যদি তোমাদের পেতাম, তো জীবন কতো সুন্দর আর আনন্দময় হতো।
শেয়ালেরা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বললো, আচ্ছা তোমরা থাকো আমাদের সাথে। আমরা দেখতে চাই, এ বনে তোমরা কেমন সুখ আর শান্তি বিলিয়ে দিতে পার।
কুকুরেরা বনে থাকতে শুরু করলো।
চলবে....
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৭
এএ