জ্যাক ভেবেছিল জানালা বানানো কঠিন হবে, আর ওখান দিয়ে বেশি বেশি বাতাস ও বৃষ্টি ঢুকবে। তাই দরজা বন্ধ করার পর উইলো বাড়ির ভেতরটা অন্ধকার আর খানিকটা নিষ্প্রাণ বলে মনে হয়- তবে তাতে কেউ কিছু মনে করে না! অন্য সবদিক থেকে এটা অনেক বেশি নজরকাড়া! বাচ্চারা উইলো বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে এবং চারদিকে তাকায়- কেবল নোরা বাদে।
“নোরা, এখনই উঠে না এলে নাস্তার আগে আর গোসলের সময় পাবে না,” পেগি চিৎকার করে বলে। নোরাও তাই বেরিয়ে আসে। কী সুন্দর সকাল! ঝড়টা সবকিছু সাফ করে দিয়ে গেছে, চারদিক তাই সবেমাত্র ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এমনকি মনে হচ্ছে খাদহীন নীল আকাশটাকে পর্যন্ত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
হ্রদের জলও আকাশের মতই নীল। আগের রাতের ভারী বৃষ্টির কারণে গাছগুলো তখনো সামান্য ভেজা, এবং ঘাস আর লতা-গুল্মে পা ভিজে যাচ্ছে।
“সবকিছু পুরোপুরি নতুন বলে মনে হচ্ছে,” মাইক বলে। “যেন সবেমাত্র সকালেই সবকিছু বানানো হলো! এসো, ডুব দিয়ে আসা যাক!”
জল ছিটাতে ছিটাতে! ওরা লেকে নেমে পড়ে। মাইক এবং জ্যাক দু’জনেই সাঁতার জানে। জ্যাক মাছের মতো সাঁতার কাটে। পেগি অল্পস্বল্প সাঁতার জানে, আর নোরা একেবারেই জানে না। জ্যাক তাকে শেখায়, তবে সে লেকের তলার বালি হতে পা তুলে না। পেগিই প্রথম জল থেকে উঠে আসে এবং নাস্তা বানায়- কিন্তু ছোট্ট সৈকতের দিকে তাকানোর পর সে আতঙ্কিত হয়ে উঠে দাঁড়ায়!
“এদিকে তাকাও, এই ছেলেরা!” সে চেঁচিয়ে ওঠে। “দেখো, নোরা! লোকগুলো ঘুরতে এসে আমাদের সৈকতের এ কী অবস্থা করে গেছে!”
ওরা সবাই শীতল জল থেকে উঠে আসে, এবং তোয়ালে দু’টো দিয়ে গা মুছে, তাদের ছোট্ট বেলাভূমির চারপাশটা ভালো মতো তাকিয়ে দেখে। জায়গাটা সব সময়ই খুব মনোরাম, ওর রূপালি বালি ঝকঝকে তকতকে পরিষ্কার।
কিন্তু এখন, কী পার্থক্য! চারদিকে কমলার খোসা, বাদামী পিচ্ছিল কলার ছিলকা, যেখানে ছুড়ে ফেলা হয়েছে সেখানেই বৃষ্টিতে ভিজে পড়ে রয়েছে। একটা টিন, একসময় তাতে টিনজাত নাশপাতি ছিল, এবং কাঠের দু’টো মাখনের খালি কার্টুন বালিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ফেলে যাওয়া একটা খবরের কাগজ বাতাসে কুটি কুটি হয়ে ছিঁড়ে এখানে-সেখানে উড়ে বেড়াচ্ছে। তালগোল পাকানো সেই আবর্জনার ভিড়ে, খালি একটা সিগারেটের প্যাকেটও রয়েছে।
চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
এইচএ