সততার কারণে মার্গারেটকে অনেকেই পছন্দ করতো। কিন্তু একরোখা স্বভাবের কারণে তাকে অভদ্র বলতো অনেকে।
মার্গারেট রসায়ন নিয়ে পড়ালেখা শুরু করে। এরপর অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন ভালো বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু মার্গারেটের আগ্রহ যেন অন্য কিছুতে। সে দেশকে নেতৃত্ব দিতে চায়, ঠিক যেভাবে ছোটবেলায় ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে সহপাঠীদের নেতৃত্ব দিয়েছে সে।
তাই সে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচনে দাঁড়ায়। প্রথমবার সে বিজয়ী হতে পারেনি, এমনকি দ্বিতীয়বারও না! কিন্তু মার্গারেট এতো সহজে হাল ছাড়বার পাত্র না।
পার্লামেন্টের সদস্যদের দেশের আইন-কানুন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা দরকারি। তাই মার্গারেট আবার কলেজে ভর্তি হলো। এবার সেখানে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শুরু করে। পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ আসতে আসতে মার্গারেট বিয়ে করে ফেলে। দেখতে দেখতে দু’টো ফুটফুটে যমজ বাচ্চার মা’ও হয়ে যায় সে।
কিন্তু এবারের নির্বাচনে মার্গারেটকে ডাকলো না তার দল। তাদের মতে, নতুন মা হওয়া মার্গারেট পার্লামেন্ট চালানোর জন্য উপযুক্ত না।
এতেও নিরাশ হয়নি মার্গারেট। সে পরের নির্বাচনের অপেক্ষা করতে থাকে। ততোদিনে তার সন্তানেরাও কৈশরে পৌঁছে যায়। তাই এবারে মার্গারেটের স্বপ্নপূরণে আর কোনো বাধাই থাকে না। সে বিজয়ী হয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে।
পার্লামেন্টে খুব ভালো অবদানের জন্য মার্গারেটকে দলপতির আসনে বসায় কনজার্ভেটিভ পার্টি। দেখতে না দেখতে সে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে যায়। ব্রিটেনের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর সম্মান অর্জন করে মার্গারেট থেচার।
প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালনের সময়টা অনেক ভালো-খারাপের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চাদের জন্য ফ্রি দুধের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকে তাকে অপছন্দ করা শুরু করে। আবার আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ফকল্যান্ডের যুদ্ধ জয়ের কারণে অনেকে মানুষ তার ক্ষমতার প্রশংসা করে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্গারেট সবসময় বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতো। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনেকেই মার্গারেটকে চাপ দেয়। কিন্তু সে নিজের সিদ্ধান্তে সর্বদা অটুট থাকে। তার এই দৃঢ়-চরিত্রের কারণে বিশ্বের সবাই তাকে, ‘আয়রন লেডি’ বা ‘লৌহ মানবী’ হিসেবে চেনে।
‘যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য তোমাকে একাধিকবার লড়াই করতে হতেই পারে’- মার্গারেট থেচার
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এনএইচটি/এএ