ম্যারিদের পারিবারিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটতো না হতদরিদ্র পরিবারটির সদস্যদের মুখে।
ম্যারি ভাবতে থাকে, কীভাবে তার হতদরিদ্র বাবা-মায়ের সংসার থেকে অভাব দূর করা যায়। ভাবতে ভাবতে একদিন ম্যারির মাথায় বক্সিং খেলার ভূত চেপে বসে। বক্সিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলে আর কোনো অভাব থাকবে না তাদের।
এলাকার বক্সিং জিমের কোচকে গিয়ে সে বলে, ‘তুমি কি আমাকে বক্সিং শেখাবে?’
কোচ জবাবে বললেন, ‘তুমি খুবই ছোট। তোমাকে এ খেলায় নেওয়া যাবে না। এখন ভাগো এখান থেকে!’
দিন শেষে কোচ বাড়ির পথে পা বাড়ানোর সময় দেখলেন ম্যারি তখনও জিমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ম্যারির দৃঢ় মনোবল দেখে কোচ তাকে বক্সিং রিংয়ে (যে মাচার উপর বক্সিং খেলা হয়) প্রবেশের অনুমতি দিলেন।
কোচ ম্যারিকে বক্সিং শেখানো শুরু করে। ম্যারি দিনরাত পরিশ্রম করে এবং একের পর এক বক্সারকে পরাজিত করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে বাবা-মা’কে কিছুই জানায় না।
একদিন পত্রিকায় ম্যারির ছবি প্রকাশ পেলে তার বাবা খুবই অবাক হন। ম্যারিকে ডেকে তিনি বলেন, এসব খেলায় তুমি ব্যাথা পেলে আমি খুবই বিপদে পড়ে যাবো। তোমার চিকিৎসা করানোর মতো টাকা নেই আমার।
ম্যারি বলে, আমার চিকিৎসা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না বাবা। আর কিছুদিন পরেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য আমি লড়াই করবো। সেখানে জিতে গেলে আমার চিকিৎসার খরচ আমি নিজেই চালাতে পারবো।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রশিক্ষণের জন্য ম্যারিকে হোস্টেলে থাকতে হতো। অনেক পরিশ্রমের পরও শুধু সবজি খেয়েই তাকে দিন পার করতে হতো, কারণ মাংস কেনার টাকা ছিল না ম্যারির কাছে। প্রায়ই তাকে সকালের নাস্তা না করেই প্রশিক্ষণে যেতে হতো, কারণ তার পকেটে কেবল লাঞ্চ ও ডিনারের টাকা থাকতো।
ম্যারির বাবা-মা টেলিভিশনে মেয়ের লড়াই দেখলেন। ম্যারি একের পর এক ম্যাচ জিতে যায়। তার গলায় শোভা পায় মেডেলের পর মেডেল। পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় সে। এমনকি অলিম্পিকেও সে মেডেল অর্জন করে।
এভাবেই বক্সার ম্যারি তার গ্রামের নাম উজ্জ্বল করে এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থা সমৃদ্ধ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
এনএইচটি/এএ