স্কুলের মাঠটা মিতুলের অনেক ভালো লাগে। বাড়ির পাশে যদি একটা খেলার মাঠ থাকতো অমন।
মা খাবার টেবিলে ডাকলেন। মিতুল খাবার টেবিলে গিয়ে বসলো মা-বাবার পাশে। মা মিতুলকে দেখে বললেন, কী হয়েছে তোমার মন ভালো নেই?
মিতুল ভাবে, মায়েরা এমন কেন? সহজেই মনের কথা বুঝতে পারেন কেমন করে?
ভালো লাগছে না মা?
বাবা বললেন, কেন কী হয়েছে মিতুল সোনার?
মিতুল বললো, আচ্ছা বাবা তুমিই বলো ল্যাপটপে গেম খেলে কত সময় কাটানো যায়?
আচ্ছা বাবা, মা আজ আমি তোমাদের আমার ইচ্ছের কথা বললো?
তিনটি ইচ্ছের কথা।
মা বললেন, তিনটা ইচ্ছে?
বাবা বললেন, ঠিক আছে ঠিক আছে, বলো তোমার তিনটি ইচ্ছে। আমরা শুনতে চাই।
মিতুল বলতে থাকে, প্রথম ইচ্ছে আমি আমার পোষা টিয়ে পাখিটাকে মুক্ত করে দিতে চাই।
মা বললেন, বাহ্ এতো খুব ভালো কথা। আনন্দের কথা।
দ্বিতীয় ইচ্ছেটা বলি তোমাদের। আমি একটি ফুলের বাগান করতে চাই। বাড়ির উঠোনের একপাশে। যে জায়গাটা খালি পড়ে আছে। সেখানে। অনেক ফুলের গাছ থাকবে। অনেক রঙের। নানা রঙের প্রজাপতি দলবেঁধে ফুলে ফুলে খেলা করবে। আমি ফুলকলিদের যত্ন নেবো। প্রজাপতির বন্ধু হবো।
আর তৃতীয় ইচ্ছেটা হলো, আমি একটা ছোট লাইব্রেরি করতে চাই। যেখানে মজার মজার সব বই থাকবে। অবসরে আমি যেখানে সময় কাটাতে পারবো। ভেবে না সবসময় সেটা নিয়ে মেতে থাকবো। সেখানে আমাদের বন্ধুদের অনেকের বাসায় ছোট ছোট লাইব্রেরি আছে। আমার অনেক দিনের সাধ, আমাদের বাসায় অমন একটা লাইব্রেরি থাকবে।
মা-বাবা দু’জন মিতুলের ইচ্ছের কথা শুনে বিম্মিত হলেন। খুশিতে মন ভরে গেলো তাদের।
মা বললেন, বাহ্ মিতুল। তোমার ইচ্ছেগুলো খুব সুন্দর। তোমার ইচ্ছে পূরণে আমি যতটা পারি সহযোগিতা করবো।
বাবা বলেলন, মিতুল তোমার কথা শুনে আমার অনেক ভালো লাগলো। তোমার ইচ্ছেগুলো পূরণ করা আমাদের অনেক আগেই উচিত ছিল।
তোমার প্রথম ইচ্ছে তুমি নিজেই পূরণ করতে পারবে।
দ্বিতীয় ইচ্ছে পূরণে তোমার মা তোমাকে সাহায্য করবে।
আর থাকলো তৃতীয় ইচ্ছে।
আগামী শুক্রবার ছুটির দিন। এদিন তোমার লাইব্রেরির জন্য পছন্দ মতো বই কিনবে। কেমন? এবার খুশি তো?
আমি চাই তুমি শুধু ভালো ছাত্র না, মানুষের মতো মানুষ হবে। তোমার স্বপ্ন পূরণে আমরা তোমার পাশে আছি সবসময়।
মিতুল মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে।
আমি জানতাম তোমরা আমার কথা রাখবে।
মিতুলের চোখে জল চলে আসে। এ জল বড় আনন্দের।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এএ