কিন্তু মাইক কি তার জন্য এখনও ওখানে অপেক্ষা করছে? সম্ভবত লোকেরা এরই মধ্যে চারটে শিশুকে খোঁজাখুজি শুরু করেছে- এবং মাইক আর নৌকার খোঁজ পেয়ে গেছে! এরপর? সে এখন কেমন করে দ্বীপে মেয়েদের কাছে যাবে?
জ্যাক ক্ষুধা, তৃষ্ণা সবকিছু ভুলে মাইককে যেখানে রেখে এসেছে যতদ্রুত সম্ভব একনাগাড়ে সেদিকে ছুটতে শুরু করে। কেউই তাকে দেখতে পায় না।
তারপর তার হৃদপিণ্ডটা আনন্দে লাফাতে শুরু করে! সে মাইকের গলার আওয়াজ শুনতে পায়! তুমি এসেছ, জ্যাক? অনেক দেরি করে ফেলেছ! কী হয়েছে?
১৬. আতিপাতি খোঁজাখুঁজি
জ্যাক হাঁপাতে হাঁপাতে হুড়াহুড়ি করে নৌকায় গিয়ে ওঠে। তাড়াতাড়ি, ধাক্কা লাগাও, মাইক! সে বলে। আজ একটু হলেই ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম, আর কেউ দেখে ফেললে আমাদের সবার খোঁজ পেয়ে যাবে!
মাইক ধাক্কা মারে, তার বুক কেঁপে ওঠে। ধরা পড়ার পর খালুর খামারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে কথাটা চিন্তা করেই সে আঁতকে ওঠে। জ্যাক হাঁফ ছেড়ে বসা পর্যন্ত সে অপেক্ষা করে এবং তারপর তাকে কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে।
জ্যাক তাকে সবকিছু খুলে বলে। অসহায় জ্যাক মুরগির খোপের ভেতর একপাল মুরগির সঙ্গে বসে রয়েছে দৃশ্যটা কল্পনা করার পর মাইক হাসি আটকাতে পারে না- তবে ওর খুব ভয় হয়। জ্যাক ধরা পড়ে যেতে পারতো!
আজই আমার শেষ বাজার, হতাশায় জ্যাক বলে। কোনো গ্রামে গিয়ে আর নাক দেখাবার সাহস করতে পারবো না। ওরা সবাই আমাকে খুঁজে বেড়াবে। চাইলেই কেন কেউ পালিয়ে থাকতে পারবে না? আমরা তো কারও কোনো ক্ষতি করছি না- কেবল মিলেমিশে আমাদের রহস্য দ্বীপে সুখে শান্তিতে বসবাস করছি! কিছুক্ষণ পর জ্যাক নৌকা বাইতে মাইককে সাহায্য করে। চাঁদ ওঠার পরপরই ওরা রহস্য দ্বীপে এসে ভিড়ে। মেয়েরা বড় একটা আগুন জ্বেলে বেলাভূমিতেই উদ্বেগের সঙ্গে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল।
ওহ্ জ্যাক, ওহ্ মাইক! দু’জনকে জড়িয়ে ধরে, নোরা চেঁচিয়ে ওঠে এবং ওদের আবারও দেখতে পেয়ে আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেলে। ভেবেছিলাম তোমরা আর ফিরে আসবে না! আমরা ভয়ঙ্কর সবকিছু ভেবে দেখেছি! মনে হয়েছিল নিশ্চিত ধরা পড়ে গেছো!
আমি আরেকটু হলেই ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম, জ্যাক বলে।
তোমার সব বাজার-সদাই কোথায়? পেগি জিজ্ঞেস করে।
কিছুই কিনতে পারিনি, জ্যাক বলে। সবে একটি ঝুড়ি বেচলাম, তখনই পুলিশটা আমাকে দেখতে পেলো। ওটা বিক্রির টাকা আমার কাছে আছে-কিন্তু এই দ্বীপে টাকা দিয়ে কী হবে, এখানে কিছুই কিনতে পারবে না!
চলবে…
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৮
এএ